

ট্রিবিউন ডেস্ক: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বৈশ্বিক তৈরী পরিবেশের জন্য সারা বিশ্বেই জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা বিদ্যমান। বিদ্যুৎ বিভাগ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দিকে যাচ্ছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তা বাধাগ্রস্থ করেছে। আগামী মাস বা তার পরের মাসে আরো ভালো অবস্থায় যাবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। চুক্তিটির আওতায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জলকারি এলাকায় সিটি করপোরেশনের বর্জ্য থেকে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করবে চীনা কোম্পানি ইউ এন্ড ডি গ্রুপ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশে একটি গ্রুপ সবসময় ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত রয়েছে। অনেক সময় বক্তব্য আংশিকভাবে এবং কখনও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়। অনেকে টাকার মান কমে যাওয়া, পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার উদাহরণ দিতে চান। এটা বৈশ্বিক সমস্যা, ইউরো বলেন, রুপি বলেন, রিয়েল বলেন সবজায়গায় একই অবস্থা। অনেক দেশে অনেক কিছু সীমিত করে আনছে। আমরা অনেকের তুলনায় ভালো আছি। আমরা সুখে আছি শান্তিতে আছি, অনেকের তা সহ্য হয় না।
তিনি বলেন, মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। এখন শুধু শহরে নয়, গ্রামেও বর্জ্য বেড়েছে। এখনই উদ্যোগ না নিলে পরিবেশের ভাবসাম্য নষ্ট হবে। নদীগুলো দুষণ হবে। আমরা এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছি। কোন খাতই সরকারের মনযোগ থেকে বাদ থাকছে না।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বহুমুখী উৎসের মাধ্যমে নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যাপ্তি বাড়ানোর উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। সৌর, বায়ু, পানি, বা বর্জ্য নিয়ে গবেষণা চলছে। হাইড্রোজেন ফুয়েলও আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে। ইলেকট্রিক যানবাহনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। আমরা চার্জিং গাইডলাইন তৈরি করে ফেলেছি। ইঞ্জিনের দক্ষতা বেশি হওয়ায় সাশ্রয়ীভাবে ইলেকট্রিক যান পরিচালনা করা সম্ভব। তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বেই সংকট চলছে। বিশ্বের অনেক দেশ ভীষণ কষ্ট করছে, আমরাও কষ্টে আছি। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পীড়া দিচ্ছে। কেউ চায় না দুর্ভোগ বাড়াতে। আমাদের মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ। বিশ্বে অনেক দেশে তা ২০ শতাংশ। আমরা অনেকের চেয়ে ভালো আছি। আর কয়েকটা মাস ধৈর্য্য ধরুন। সব ঠিক হয়ে যাবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ২০১১ সালে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্পটির জন্য কাজ শুরু হয়। কিন্তু এর অগ্রগতি দেখে আমরা এক পর্যায়ে হতাশ হয়েছিলাম। আজকে ভালো লাগছে কাজটি করতে পেরে। আমরা দৈনিক ৬০০ টন ময়লা দেবো কেন্দ্রটিতে। না দিতে পারলে জরিমানা গুনতে হবে। আবার তারা যদি নিতে না পারেন, তাহলে তাদেরকেও জরিমানার শর্ত রাখা হয়েছে।
গতকাল একই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি, বাস্তবায়ন চুক্তি, বর্জ্য সরবরাহ চুক্তি ও ভূমি ব্যবহার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পিডিবি ও ইউ এন্ড ডি’র মধ্যে সম্পাদিত ২০ বছর মেয়াদী চুক্তির আওতায় কেন্দ্রটিতে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ২০ দশমিক ৯১ সেন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। চুক্তিতে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে স্বাক্ষর করেন যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মন্ডল।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিডিবি’র চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান।