অভিযোগ সব ভিত্তিহীন,বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করলেন রাবি উপাচার্য

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৫:৫৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২০

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন ও পুনরায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনকে একপেশে এবং পক্ষপাতমূলক বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপাচার্য আব্দুস সোবহান।

এসময় লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য আব্দুস সোবহান বলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত বড়-বড় আর্থিক দূর্নীতি ও অনিয়ম, ঢাকাস্থ অতিথি ভবন ক্রয়ে ১৩ কোটি টাকা,কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে হেকেপ প্রকল্পের সাড়ে তিন কোটি টাকা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক নির্মাণে ৮০ লক্ষ টাকা তছরূপের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সিন্ডিকেট কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠনের পরপরই বর্ণিত অপকর্মের সাথে সংশ্লিষ্টরা আমার বিরুদ্ধে নিরন্তর অসত্য , বানােয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোেগ মজুরী কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে এবং পত্র – পত্রিকাসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করতে থাকে ।

আসলে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ নামধারী কতিপয় দুর্নীতিপরায়ন শিক্ষক নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার নিমিত্তেই সরকার ও স্বাধীনতা বিরােধী চক্রের যােগসাজসে অসত্য অভিযােগসমূহ উত্থাপন করে একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ,অন্যদিকে তেমনি সরকারকেও ব্ৰিবত করছে ।

এসময় ইউজিসি দেয়া প্রতিবেদনে ২৫টি অভিযোগের ব্যাখ্যা দেন তিনি। অভিযোগ সবগুলোই ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন। তিনি বলেন, ইউজিসি তদন্ত কমিটি আমাকে কিছু জানায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসে তদন্ত করতে পারতো। দু পক্ষের অভিযোগ সামনে আসতো কিন্তু তারা সেটা করেনি।

অভিযোগের আনা দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে ‘উপাচার্যের বাসভবনে’ ওঠার পর থেকে অধ্যাপক হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া ডুপ্লেক্স বাড়িটি ২০১৭ সালের ২৬ জুন ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

উপাচার্যের নিজস্ব সম্পত্তি অনুসন্ধানে বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সব সম্পত্তি সততা দিয়েই হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সম্পদ, আয়ের উৎস, ব্যাংক হিসাব এবং আয়-ব্যয়ের বিবরণী সরকারের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে অনুসন্ধান হোক আমার কোন আপত্তি নেই।
নীতিমালা শিথিলের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, যখন নিয়োগ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে দক্ষ, মেধাবীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। নিয়োগ বোর্ড যদি মনে করে নিয়োগ দেয়ার মত তারা সেটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে তখন সেটা সিন্ডিকেটে পাশ করা হয়। এখানে পক্ষপাতের কিছু নাই।

নিজের নামে হেফজখানা নামকরণের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, হেফজখানা নামকরণ আমার নামে করা হয়নি। আর ওটা মাদ্রাসাও নয় হেফজখানা। গোরস্থান মসজিদ সংস্কার হওয়ার পর মসজিদ কমিটি থেকে হেফজ খানা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। “সোবহানিয়া আল কুরআনুল কারীম হেফজখানা নামকরণ করা হয়েছে।” আর সোবহানিয়া শব্দের অর্থ সুন্দর। আর আমার নামের অর্থ আল্লাহর দাস।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীর বিরুদ্ধে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, স্বজনপ্রীতি, টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ শিক্ষার্থী, শিক্ষক সকল মহলের কাছেই এই বিষয়টিই ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে তদন্তের বিষয়টি স্পষ্ট করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এম আবদুস সোবহান।

পোস্টটি শেয়ার করুন