আবুল কালাম আজাদ(রাজশাহী): ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য “খামকাণ্ডে ” রাজশাহী মহানগর পুলিশের চন্দ্রিমা থানার ওসি মাহবুব আলমকে সাময়িক ভাবে সদর দপ্তরে সংযুক্ত কার হয়েছে।
বিষয়টি আরএমপি সদর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে।
৬ জুলাই শনিবার আরএমপি কমিশনারের নির্দেশে তাকে থানা থেকে ক্লোজ করে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরে বসে একব্যক্তির কাছ থেকে ‘”একটি খাম”’ দেয়া ও নেয়ার ভিডিও ফাঁসের পর ওসি মাহবুবের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ফাঁস হওয়া ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, ওসি মাহবুব আলম তার চেয়ারে বসে আছেন। টেবিলের অপর দিকে চেয়ারে বসে থাকা নামে এক ব্যক্তিকে ওসি তার টেবিলের ড্রয়ার খুলে একটি খাম বের করে দেন। সামনে থাকা ওই ব্যক্তি খামটিতে কিছু ভরে ওসিকে দিলে, ওসি সেটি আবার নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেন।এসময় ওসি বলেন, ‘দুজনেরই পানিশমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই, আমার বোনের যদি পানিশমেন্ট হয় হোক, কিন্তু এই অপরাধ; অন্যায় যে করে, আর যে সহে দুজনে সমান অপরাধী।’ ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের এই ভিডিও এখানেই শেষ হয়।
তবে যে ব্যক্তি খামটি ওসিকে দিয়েছেন তার দাবি, তার বোনকে শ্লীলতাহানির কিছু গোপনীয় নথিপত্র একটি খামে করে তিনি ওসিকে দিয়েছিলেন, সেই ভিডিওই ছড়ানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ওই খাম দেওয়ার সময় সেখানে বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই খামে করে নথিপত্র ওসিকে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে ওসি মাহবুব দাবি করেছেন, ওই খাম নেওয়ার সময় তার কক্ষে আরও বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি উপস্থিত ছিলেন। কেউ তার এবং পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করতে এ ভিডিও ছড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেন ওসি।
ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে কথা হয় খাম প্রদানকারী নগরীর ভদ্রা এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার বোন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগে ফেরো প্রিন্টার পদে চাকরি করেন। সম্প্রতি তিনি তার সহকর্মী দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি ওসির সঙ্গে দেখা করেন এবং তিনি ঘটনার প্রমান স্বরুপ কিছু নথিপত্র একটি খামে করে ওসিকে দেন।গত মাসে বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, সেখানে বেশ কয়েকজন লোক উপস্থিত ছিলেন। বেশি লোক থাকার কারণে গোপন নথিপত্র একটি খামে দেওয়া হয়েছিল। নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য তখন সেটি কেউ ভিডিও করে ভাইরাল করেছে। ওই খামে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, আমরা তো ভিকটিম। আমরা কেন পুলিশকে টাকা দিতে যাব।’
এদিকে, ওসি চন্দ্রিমা থানার মাহবুব আলম দাবি করেন, এটা গত মাসের ২০ তারিখের ঘটনা, এক নারীর শ্লীলতাহানি বিষয়ে কিছু নথিপত্র একজন খামে করে আমাকে দিয়ে গিয়েছিল। সেখানে মিডিয়া কর্মীসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। সেটি কেউ ভিডিও করে রেখেছিল। তার এবং পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে সেই ভিডিও ছড়ানো হয়েছে।
এদিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রিমা থানার ওসির একটি খাম লেনদেনের ভিডিও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে। তবে, খামে কী আছে সেটি নিশ্চিত নয়। তবে ওসি মাহবুবকে ক্লোজ করে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ভিডিও কারিকেও সনাক্তের চেস্টা চলছে।