ইউক্রেনের রুশপন্থী দুই অঞ্চলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি পুতিনের: জাতিসংঘের জরুরি বৈঠক
ট্রিবিউন ডেস্ক: চরম উত্তেজনার মধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাকামী দুই প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে অঞ্চল দুটির স্বাধীনতার স্বীকৃতি সংক্রান্ত ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পর ওই দুই অঞ্চলে রুশ সেনা পাঠানোর নির্দেশে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে দুটি অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন পুতিন।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে জরুরি বৈঠকে বসে নিরাপত্তা পরিষদ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নতুন ঘোষণা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন।
বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায় চীন। দেশটির রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে হবে। উত্তেজনা বাড়াতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। আমরা কূটনৈতিক সমাধানের জন্য প্রতিটি প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।
রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, কূটনৈতিক সমাধানের জন্য আমরা উন্মুক্ত আছি। রক্তস্রোত বইয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই রাশিয়ার।
এর আগে পশ্চিমা দেশগুলো বারবার এ বিষয়ে সতর্ক করে আসছিল। তারা চাইছিল, রাশিয়া যেন রুশপন্থি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি না দেয়।
রুশ-সমর্থিত ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এলাকায় যুদ্ধ করছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও সেখানে নিয়মিত সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সমাবেশের কারণে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অঞ্চলটি। সীমান্তে চলমান যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতিতে রাশিয়া ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীদের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়া পরিস্থিতি আরও বিরূপ হয়ে উঠবে।
এর আগে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাকামী উভয় অঞ্চলের নেতারা রাশিয়াকে তাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। পশ্চিমা শক্তিগুলোর আশঙ্কা, তাদের স্বাধীনতার ঘোষণার মতো পদক্ষেপকে রাশিয়া প্রতিবেশী দেশটিকে আক্রমণের অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করতে পারে।
রাশিয়া ইউক্রেনের সীমান্তে দেড় লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো একে ইউক্রেনে বড় ধরনের আক্রমণের প্রস্তুতি হিসাবেই দেখছে। তবে রাশিয়া এ ধরনের পরিকল্পনার কথা বরাবর অস্বীকার করে আসছে।