ঐতিহাসিক বাবলাবন গণহত্যা দিবসে তালাবদ্ধ শহীদ স্তম্ভ

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৫:১৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২২

আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী): ঐতিহাসিক বাবলাবন গণহত্যা দিবস (২৫ নভেম্বর)। বেদনাবিধুর এই দিনে একাত্তরের বিজয়ের প্রাক্কালে রাজশাহীর ১৭ স্বাধীনতাকামী বীর সন্তানকে পাকিস্তানি দোসরদের সহায়তায় তুলে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

দুঃখ জনক হলেও সত্য রাজশাহী নগরীর পদ্মা নদীর পা‌ড়ে শ্রীরামপুর বাবলা বনে ১৭জন‌কে হত্যা ক‌রা হ‌য়ে‌ছি‌লো। গণহত্যার এইদিন ‌টি পালনের জন্য ৭১ এ নিহত শহীদের স্বজনরা সকা‌লে টি-বাঁ‌ধে স্মৃ‌তি স্তম্ভে ফুল দি‌য়ে শ্রদ্ধা ও স্মরণ কর‌তে গে‌লে দেখা যায় শহীদ মিনার‌টির ফট‌কে তালা দেয়া। রাজশাহীর জেলাপ্রশাসক কিংবা চেতনার কথা ব‌লে যারা ফায়দা লু‌টে তা‌দের কি জানা নেই আজ‌কের দিন‌টির কথা। অন্তত আজ‌কের দি‌নে শহীদ স্তম্ভ‌টি প‌রিস্কার ক‌রে সকাল থে‌কে গেট‌টির তালা খোলা রাখার? শ্রদ্ধা জানা‌তে প্রাচির টপ‌কে ভেত‌রে প্রবেশ ক‌রে কেন তারা শ্রদ্ধা জানা‌বে? এই লজ্জা কার?

উল্লেখ্য,বিজয়ের পরপর ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহীর পদ্মাচর শ্রীরামপুর এলাকা থেকে তাদের দড়িবাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ দেখতে সেদিন বোয়ালিয়া ক্লাব চত্বর পদ্মার পাড়ে জনতার ঢল নামে।

তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার ৪৬ বছর অতিবাহিত হলেও সরকারিভাবে বাবলাবন গণহত্যা দিবস পালন করা হয় না। বর্তমানে হত্যাকাণ্ডের স্থানটি নদীগর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে।

এখানে, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য নাজমুল হক সরকার, সরকারি কর্মকর্তা আবদুল হক সরকার, অধ্যাপক মীর আব্দুল কাইয়ুম, শামসুল ইসলাম ঝাটু, অ্যাডভোকেট সুরেশ পাণ্ডে ও বীরেন সরকারসহ শত শত বাঙালি এবং বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল ‘টি-গ্রোয়েন’ সংলগ্ন এই বাবলাবন বধ্যভূমিতে।

সে ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী এক প্রবীন জানান, ওই বধ্যভূমি থেকে একই দড়িতে বাঁধা ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছিলেন তারা। এমন হত্যাযজ্ঞের নিদর্শন রয়েছে প্রতিটি বধ্যভূমিতেই। কিন্তু বাবলাবনের মত মহানগরীর অন্য বধ্যভূমিগুলো অবহেলিত।

রাজশাহীবাসীর দাবিতে ২০২০ সালের সালের ১৪ই ডিসেম্বর বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সৌধের ফলক উম্মেচন করে উদ্বোধন করেন মাধ্যমে করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
এসময় শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারাও।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি রাজশাহী।

এ লজ্জা কার?
আজ ২৫ ন‌ভেম্বর রাজশাহী নগরীর পদ্মা নদীর পা‌ড়ে শ্রীরামপুর বাবলা বনে ১৭জন‌কে হত্যা ক‌রা হ‌য়ে‌ছি‌লো। গণহত্যার এইদিন ‌টি পালনের জন্য ৭১ এ নিহত শহীদের স্বজনরা সকা‌লে টি-বাঁ‌ধে স্মৃ‌তি স্তম্ভে ফুল দি‌য়ে শ্রদ্ধা ও স্মরণ কর‌তে গে‌লে দেখা যায় শহীদ মিনার‌টির ফট‌কে তালা দেয়া। রাজশাহীর জেলাপ্রশাসক কিংবা চেতনার কথা ব‌লে যারা ফাইদা লু‌টে তা‌দের কি জানা নেই আজ‌কের দিন‌টির কথা। অন্তত আজ‌কের দি‌নে শহীদ স্তম্ভ‌টি প‌রিস্কার ক‌রে সকাল থে‌কে গেট‌টির তালা খোলা রাখার? শ্রদ্ধা জানা‌তে প্রাচির টপ‌কে ভেত‌রে প্রবেশ ক‌রে কেন তারা শ্রদ্ধা জানা‌বে? এই লজ্জা কার?

এদিকে, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে রাজশাহীতে থাকা জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ ও রাজশাহী প্রেসক্লাব ক্ষুদ্র পরিসরে বাবলাবন শহীদদের স্মরণ করে আসছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন