ট্রিবিউন ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উপকূলে উঠে আসার পর বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে বিপদ সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ রাত পার হলেই স্পস্ট হবে। এ পর্যন্ত পাঁচ জেলায় ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার মধ্যরাতের পর ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। ঘূর্ণিঝড়টি স্থল নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার পর এখন বৃষ্টি ঝরিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে পাঁচ জেলায় একই পরিবারের ৩ জনসহ এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া, ঝড়ো বাতাসের সাথে সারাদেশে বইছে টানা বৃষ্টি। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে।
জানা গেছে, কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে গাছ চাপা পড়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোলার দৌলতখান পৌরসভায় গাছ ভেঙে পড়ে বিবি খাদিজা (৬৮) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানা এলাকায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর ওপর গাছ ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান। অপরজনকে আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে। হতাহত দুজনের কারো নাম বা পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে, সোমবার দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মর্জিনা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। সোমবার সন্ধ্যায় বরগুনা সদর উপজেলায় ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়লে মৃত্যু হয় আমেনা খাতুন (১০০) নামের আরেক বৃদ্ধার। আর, সোমবার রাত ৯টায় সিরাজগঞ্জে বৈরি আবহাওয়ার কারণে হওয়া এক নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় মা-ছেলের।
জানা গেছে, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, কক্সবাজারে ডুবেছে প্রধান সড়ক। চট্টগ্রামে কয়েকটি স্থানে তলিয়েছে জেলে পল্লী। নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৭টি ইউনিয়নের ভাঙা বেঁড়িবাধ দিয়ে পানি ঢুকে ২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
মাদারীপুরের রাজৈর মহাসড়কে গাছ ভেঙে পড়ায় বরিশাল বিভাগের সাথে সারা দেশের যোগাযোগ বেশ কিছু সময় বন্ধ ছিলো বলে জানা গেছে। এ সময় যানজট ছড়িয়ে পড়ে কয়েক কিলোমিটার। একই চিত্র দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। সেখানেও মহাসড়কে ভেঙে পড়েছে গাছ।
আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়; মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে বলে এই আবহাওয়াবিদ জানান।
ঝড়ের আগে মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার বলছে, ক্রমশ দুর্বল হতে থাকা সিত্রাং ঢাকা পেরিয়ে এখন সিলেট অঞ্চল অতিক্রম করছে।