গোমস্তাপুরে উদ্ধারকৃত লাশের রহস্য উন্মোচন: শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৪:০১ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২২

গোমস্তাপুর প্রতিনিধি: তৃতীয় স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিকের হাতেই খুন হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের পার্বতীপুর ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম (৬০)। গত বুধবার জেলার রহনপুর-আড্ডা সড়কের পাশে থেকে নজরুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে পড়ে থাকা একটি প্লাস্টিকের দড়ির সূত্র ধরে পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচন করে।

লাশ উদ্ধারের পরই বিভিন্ন সূত্র ধরে পুলিশ তদন্তে নামে। সন্দেহভাজন ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২ জনকে মূল হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তারা হলো: হত্যাকান্ডের শিকার নজরুল ইসলামের তৃতীয় স্ত্রী লালবানু ও তার পরকীয়া প্রেমিক শাকির।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সাবেক সেনা সদস্য আশরাফুল হকের দায়ের করা হত্যা মামলায় তাদের শুক্রবার সকালে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোমস্তাপুর (সার্কেল) এর নেতৃত্বে হত্যাকান্ডের শিকার নজরুলের ৩য় স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়; সে তার নিজ বাড়ীতে চা স্টল এর দোকান করত। সে সুবাদে বাড়ীর পাশের ইট ভাটার ম্যানেজার শাকির এর সাথে তার পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত মার্চ মাসে শাকির এনায়েতপুর বাজার থেকে তার নিজ নামে রেজিষ্ট্রেশন কৃত একটি নতুন সিম কার্ড ও মোবাইল কিনে ভিকটিমের স্ত্রী লালবানু কে দেয়। এভাবে গোপনে চলতে থাকে লালবানু ও শাকিরের পরকীয়া প্রেম কাহিনী। ভিকটিমের অগোচরে তার স্ত্রী অতি গোপনে শুধুমাত্র ঐ মোবাইল দিয়ে শাকিরের সাথে কথা বলত এবং কথা বলা শেষে মোবাইল টি লুকিয়ে রাখত। কিছুদিন আগে ভিকটিম বিষয়টি টের পেলে তার স্ত্রীকে মারধর করে এবং প্রেমিক শাকির কে গালিগালাজ করে সাবধান করে দেয়। যার ফলশ্রুতিতে সাকির খুব রাগান্বিত হয় এবং ভিকটিমকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে।

অপরদিকে ভিকটিম তার স্ত্রীকে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায় মারধর করত। যার ফলে ভিকটিমের স্ত্রী তার প্রেমিকের কথায় সহজে রাজী হয়ে যায় এবং ভিকটিমকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে ভিকটিম তার শয়ন ঘরে ঘুমিয়ে পড়লে ভিকটিমের স্ত্রী ও প্রেমিক শাকির রাত ১১টা থেকে ১২ টার মধ্যে ভিকটিম কে বালিশের উপরে দেওয়া কাঁথা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ভিকটিমের দুই পা চেপে ধরে তার স্ত্রী এবং গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চত করে প্রেমিক শাকির। অতঃপর ঘটনার মোড় অন্য দিকে ধাবিত করতে লালবানু ও শাকির ভিকটিমের মরদেহ কাধে করে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে রাস্তার পাশে রেখে আসে। ভিকটিমের স্ত্রীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী প্রেমিক শাকির কে আটক করা হয়।

গোমস্তাপুর থানার ওসি দিলিপ কুমার দাস জানান, “এ ঘটনায় আটককৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী লালবানু তার পরকীয়া প্রেমিক শাকিরকে নিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে।”

উল্লেখ্য, গত বুধবার  উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের রহনপুর-আড্ডা আঞ্চলিক সড়কের নজরপুর নামক স্থানে রাস্তার পাশ থেকে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। সে পার্বতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্ৰামের রুস্তম আলীর ছেলে।

পোস্টটি শেয়ার করুন