নিজস্ব প্রতিবেদক: দাম্পত্য কলহের জেরে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে হত্যা করে তার স্বামী সাখাওয়াত আলিম নোবেল। হত্যার পর লাশ গুম করতে লাশকে দ্বি খণ্ডিত করে বস্তাবন্দি করে কেরাণীগঞ্জের একটি ব্রিজের পাশে ফেলে দেয়। আবার সেই হত্যাকারী স্বামী ই নিখোঁজ নাটক সাজিয়ে রবিবার কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি করে।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ। এ ঘটনায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। শিমুকে যে গাড়িতে করে কেরাণীগঞ্জের আলীপুর ব্রিজের পাশে ফেলে যাওয়া হয়, সেই গাড়িও জব্দ করে থানায় রাখা হয়েছে।
জানা যায়, রবিবার সকালে শ্যুটিংয়ের জন্য বাড়ি থেকে বের হন অভিনেত্রী শিমু। তারপর তাঁকে একাধিক বার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি অভিনেত্রীকে। তাঁর সন্তানদের ধারণা ছিল, অভিনেত্রী হয়তো শ্যুটিংএ ব্যস্ত। কিন্তু, সন্ধ্যার পর অভিনেত্রী বাড়ি না ফেরায় পরিবারের তরফে কলাবাগান থানায় জেনারেল ডায়েরি করা হয়। তারপর অভিনেত্রীর দু’টুকরো দেহ উদ্ধার হয় হজরতপুর ব্রিজের কাছে রাস্তার ধারে। দেহটি উদ্ধার হওয়ার পর অভিনেত্রীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে মিডফোর্ড হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই রয়েছে তাঁর মৃতদেহ।
এ ঘটনায় শিমুর স্বামী নোবেলকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন অভিনেত্রীর ভাই শহিদুল ইসলাম খোকন।
রাইমা ইসলাম শিমুর বোন ফাতেমা জানিয়েছেন, রোববার বোনের খোঁজ না পেয়ে তারাও থানায় জিডি করেন। পরে পিবিআই মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি জানায়।
১৯৯৮ সালে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে বরিশালের মেয়ে রাইমা ইসলাম শিমুর। তার প্রথম সিনেমা কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’। যেখানে তিনি অভিনয় করেন তখনকার জনপ্রিয় তারকা মান্না, মৌসুমী, ডিপজল প্রমুখের সঙ্গে। প্রায় ২৩ টি সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কাজ করেন। ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জামাই শ্বশুর’ সিনেমার পর আর তাকে চলচ্চিত্রে দেখা যায় নি।
তবে, গত কয়েক বছর ধরে শিমু নাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিনয় করেছেন প্রায় ৫০টি নাটকে। সম্প্রতি আলোচিত নাটক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’-এও অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। তার নিজের প্রোডাকশন হাউজ ছিল। মাঝে মধ্যে পরিচালনাও করতেন এই নায়িকা।
রাজধানীর গ্রীনরোড এলাকায় স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।