জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে বোয়ালিয়া থানা পশ্চিম ছাত্রলীগের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবসে শহীদ জাতীয় নেতাদের স্মরণে বোয়ালিয়া থানা পশ্চিম ছাত্রলীগের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১২টায় রাজশাহী নগরীর সপুরা ওয়াবদা মোড়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তি ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা: আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও জাতীয় নেতাদের স্মৃতিচারণ করে ডা: অর্ণা জামান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, স্বাধীন বাংলার যিনি জন্ম দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং পরবর্তীতে সেই হত্যাকাণ্ডের সাথে সমসাময়িক একটি ঘটনা তেশরা নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার অভ্যন্তরে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় শুধু গুলি করে নয়, পরে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করা হয় এবং এই দুটি ঘটনায় একই সূত্রে গাঁথা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা এত সহজ ছিল না, কল্পনা করা যায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে বাঁচবে, বাংলায় কথা বলবে এবং কেউ কখনো আমাদের কাছ থেকে আমাদের বেঁচে থাকা স্বাধীন ভাবে বসবাস করার অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।

তিনি আরো বলেন, একটা সময় পূর্ব পাকিস্তান-পশ্চিম পাকিস্তান ভাগ করা হয়েছিল দেশটি সেসময় থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু। অনেকেই চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন কখনো বাস্তবে পরিণত না হয়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে এবং তার পরের স্বাধীন বাংলাদেশে তবুও যেন স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চাই, বারবার বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ঠিকই কিন্তু স্বাধীন ভাবে বসবাস করার অধিকার পাচ্ছিল না বাঙালিরা।

ডা. অর্ণা জামান বলেন, ৭১’র পরবর্তী সময়ে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষের জন্য কাজ করার খুব বেশি সময় পাননি। তিনি যখন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশটিকে গুছিয়ে নিচ্ছিলেন সেই সময় দেশের যে অবস্থা- খাদ্যসঙ্কট, অন্যান্য সমস্যা, বসবাসের সমস্যা সেগুলো ধীরে ধীরে দেশটাকে কাটিয়ে উঠছিল ঠিক সেই সময়ে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি যারা কখনোই চায়নি বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে থাকুক, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার যারা কেড়ে নিতে চেয়েছিল তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করেছিল তারা জাতিগতভাবে বাঙালি ছিল কিন্তু অন্তরে তাদের বাঙালির কোন চেতনা ছিল না। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে এবং তারা যখন দেখে এই জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধু সবচেয়ে কাছের ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করার পর বিনা অপরাধে যখন জাতীয় চার নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলখানার অভ্যন্তরে তাদেরকে প্রস্তাব দেয়া হয় আপনাদের মন্ত্রিত্ব দেব, দেশের মন্ত্রী বানাবো কিন্তু বঙ্গবন্ধু যে কাজটা করতে চেয়েছিল সেভাবে কাজ করা যাবে না, বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করা যাবেনা। তারা (জাতীয় চার নেতা) সেই প্রস্তাব কখনোই সেটা মেনে নেয়নি।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর একজন সূর্যসন্তান আমার দাদা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হেনা তিনিসহ বাকি যে তিন নেতা তারা সেদিন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু সহমরণের যাত্রী হয়েছিলেন। তারা তো (জাতীয় চার নেতা) সেদিন মাথা পেতে দিতে পারতেন, পরাজিত হতে পারতেন কিন্তু তারা কিন্তু তা করেননি। তারা আজ শহীদ হয়েছেন, তারা বেঁচে নেই কিন্তু তাদের স্মরণ করতে গর্ববোধ করি।

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন; বোয়ালিয়া পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা: সিরাজুম মুবিন সবুজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজিবসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বোয়ালিয়া থানা পশ্চিম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এ কে এম সাফফাত হোসেন রিয়াদ।

আলোচনা সভা শেষে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ রমজান আলী।

এরপর দোয়া শেষে স্থানীয়দের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন