

ডেস্ক নিউজ:তুরস্ক–গ্রিসে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে, ধ্বংসস্তুপের শহরে পরিনত হয়েছে।
শুক্রবার ফের সুনামি আতঙ্ক দেখা দেয়! এবার গ্রিসে। তুরস্কের একটি ভূমিকম্প সমুদ্রে তরঙ্গ তৈরি করায় মিনি সুনামি তৈরি হয় গ্রিসের উপকূলে।
বাড়ি ঘর সব ভেঙে গিয়েছে। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সংসারের নানা জিনিসপত্র। কেই কাঁদছে, কেই হতভম্ভ। কেউ খুঁজছেন নিজের আত্মীয়কে। তুরস্কের ইজমির শহরের চেহারাটা এমনই। এখানে উঁচু উঁচু সব বাড়ি, থাকেন তিন লক্ষ মানুষ। আকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা গিয়েছে, একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এই শহর। কারণ, ভূমিকম্প। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে, গ্রিস ও তুরস্কে ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। আহত বহু।
শুক্রবার ফের সুনামি আতঙ্ক দেখা দেয়! এবার গ্রিসে। তুরস্কের একটি ভূমিকম্প সমুদ্রে তরঙ্গ তৈরি করায় মিনি সুনামি তৈরি হয় গ্রিসের উপকূলে। তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তখন জানান, সেই দেশের পশ্চিম উপকূল ও গ্রিসের কিছু অংশে মারণ ভূমিকম্প হয়েছে। যে কম্পনের জেরে মৃত্যু হয়েছে চারজনের।
এখনও পর্যন্ত আহত হয়েছেন ১২০ জন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্ভাগ্যক্রমে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর প্রাথমিক ভাবে পাওয়া গিয়েছে। অনেক বাড়ি একেবারে ধুলোয় মিশে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তুরস্কের ইজমির শহরটি। এই শহরটিকে সাধারণত রিসর্ট সিটি বলা হয়। গ্রিসের টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে অ্যাজিয়ান সাগরে ছোট আকারের সুনামির ঢেউ উঠেছে। যে কারণে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে উপকূল সংলগ্ন এলাকা।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, সামোস দ্বীপ অঞ্চলের কারলোভাসি শহরের ১৪ কিলোমিটার ভিতরে এই কম্পনের কেন্দ্র ছিল। তুরস্কের কম্পন কেন্দ্র কম্পনের মাত্রা জানিয়েছে ৬.৬, একই ভাবে গ্রিসের কম্পন কেন্দ্র জানিয়েছে, কম্পনের মাত্রা ৬.৭। ইজমির শহর থেকে একাধিক ছবি উঠে এসেছে, যেখানে দেখা গিয়েছে, কী ভাবে বাড়ি ভেঙে পড়ে একেবারে ধুলোয় মিশে গিয়েছে। লোকে ছোটাছুটি করছে প্রাণে বাঁচার জন্য। সরকারি হিসাবে এখনও ছ’টি বাড়ি একেবারে ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। ভিতরে কেউ কেউ আটকে থাকতে পারেন বলেও মনে করছেন অনেকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে এসেছে এমন সব মারাত্মক ছবি, যেখানে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, লোকে আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করছেন। ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার ফলে রাস্তা ঢেকে গিয়ে চওড়া ধুলোয়। তুরস্কের এনটিভির ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কীভাবে এলাকার পর এলাকা একেবারে ধুলোয় মিশে গিয়েছে। সেনা ও পুলিশের সাহায্যে সেখানে উদ্ধারকাজে হাত মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষও।
গ্রিসেও চেহারাটা একই রকম। কম্পনের কেন্দ্র ছিল সামোস দ্বীপপুঞ্জ। সেই দ্বীপের চেহারা পাল্টে যায় কম্পনের পড়ে। হঠাৎ মাটি কেঁপে ওঠায় আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসনে সাধারণ মানুষ। অনেকগুলি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। এমন ভয়ানক পরিস্থিতির মুখে তাঁরা কোনওদিন পরেননি বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষেরা।
সামোসের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষদের খোলা জায়গায় থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। এদিকে তুরস্ক ও গ্রিস, এই দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীই এই সংকটকালে উভয়কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। এই দুই দেশই পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় অবস্থিত। ১৯৯৯ সালে ৭.৪ কম্পনমাত্রার একটি কম্পন এখানে হয়, তুরস্কে মৃত্যু হয়েছিল ১৭ হাজার মানুষের, ইস্তানবুলে মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার মানুষ।
সূত্র:Newsbangla24