সম্পাদকীয়: বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার কাছে পদ্মা সেতু এক অনুভূতি, খুশিতে উত্তেজনার মধ্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। ১৯৯৮ সালে ২৩ জুন বিশাল যমুনার বুকে সমগ্র উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ ‘বঙ্গবন্ধু সেতু’ আর ২০২২ সালের ২৫ জুন যোগাযোগের জন্য প্রমত্তা পদ্মা র বুকে ‘পদ্মা সেতু’। এই দুটোরই কৃতিত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার। তিনিই সৌভাগ্যবান প্রধানমন্ত্রী যাঁর হাতেই উদ্বোধন হলো দুই সেতু। শেখ হাসিনা সরকারের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে পদ্মা সেতু।
-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্ত আর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের অহংকারের প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের গৌরবের প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। প্রকৌশলগত এক বিস্ময়ের প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের সততার প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের অপমানের প্রতিশোধ। ষড়যন্ত্রের জবাব। পদ্মা সেতুর ফলে জাতির আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।
পদ্মা সেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা ও সাহসের সোনালি ইতিহাস। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে পদ্মা সেতুর মতো একটি কালজয়ী স্থাপনা আমাদের উপহার দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো দেশের একজন নাগরিক হিসেবে নৈতিক দায়িত্ব।
এই পদ্মা সেতু দক্ষিণ বঙ্গের ২১ টি জেলার তিন কোটি মানুষের ভাগ্যের ঘুরিয়ে দিবে। শুধু দক্ষিণ বঙ্গ নয় গোটা দেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু কারণে দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়বে ২ শতাংশের বেশি।
প্রমত্তা পদ্মার বুকে এত নিখুঁতভাবে পদ্মা সেতুর কাজ দেখে রীতিমতো গোটা বিশ্ব অবাক ও প্রশংসা করছে। পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি বিষয়ে বিশ্ব মিডিয়ার কাছে কোন খবর ছিলো না। হয়তো তারা ভেবেছে যেটা সরকার তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে তা লোক দেখানো!!
কিন্তু বিশ্বের কাছে তখনই শোরগোল পড়ে যখন সমস্ত বাধা ভেঙে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন ঘোষণার পর। বিশ্বের প্রায় সব দেশের মিডিয়ায় এই সেতু নির্মাণের বিষয় নিয়ে স্টোরি প্রচার হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশকে পজিটিভ ভাবে দেখানো হচ্ছে। পদ্মা সেতু কাজ শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই কোটি প্রতিবেদন প্রকাশ, লক্ষাধিক ইউটিউব ভিডিও ও গান তৈরি হয়েছে।
বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসায় বিশ্বের সমস্ত মিডিয়া ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ এত বড় স্থাপনা নিজেদের উদ্যোগে সম্পূর্ণ করেছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তি প্রথম পদ্মা সেতুতেই ব্যবহার করা হয়েছে। এসব নিয়েই বিশ্ব মিডিয়া তোলপাড়।
ইতিমধ্যেই বিশ্বে এযাবৎকালের যত নিউজ বিভিন্ন বিটের উপর তাতে পদ্মা সেতু শীর্ষে। সবচেয়ে বেশি নিউজ হওয়া টপিক হলো পদ্মা সেতু। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্ষরস্রোতা ও গভীর নদী পদ্মা। সেই নদীতে শত চ্যালেঞ্জ কে জয় করে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত ব্যতিক্রমী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
পদ্মা সেতু নিয়ে গোটা দেশের জনগণ গর্বিত। খুব ভালো লাগে যখন বিশ্ব মিডিয়ায় বাংলাদেশকে পজিটিভ আইকন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ২৫ জুন দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ শুধু নয়, গোটা দেশের জনগণ এই দিনটি নিয়ে অধীর আগ্রহে উত্তেজনায় সময় পার করছে। সত্যিই তো বদলে যাবে বাংলাদেশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা র প্রতি জাতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
______________
মু: আতিকুর রহমান সুমন
সম্পাদক, চাঁপাই ট্রিবিউন
www.chapaitribune.com