পশ্চিমারা ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ দেখে, ফিলিস্তিনে দেখে নাঃ চীন

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ২:৪৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২২

ট্রিবিউন ডেস্কঃ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা মানুষের মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু তারাই আবার মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর শরণার্থীদের ক্ষেত্রে পুরোপুরি উল্টো অবস্থান নেয়। পশ্চিমা দেশগুলো বিরুদ্ধে এমন দ্বিমুখী অবস্থানের অভিযোগ করেছে চীন।

গতকাল সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, ফিলিস্তিন প্রশ্ন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুগুলোতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এমন দ্বিমুখী অবস্থান নেয়া উচিত নয়।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন

গত রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সাথে সাক্ষাতের পরে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ইউরোপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে স্পষ্টভাবে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওয়াং পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপারে একই মন্তব্য করলেন।

ওয়াং বলেন, ফিলিস্তিনি প্রশ্নটি যেমন ভুলে যাওয়া উচিত নয়, তেমনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এই অবিচার বন্ধ করা উচিত। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের জন্য বেইজিংয়ের তিনটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উল্লেখ করে তিনি জানান, চীন মজবুতভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে থাকবে।

গত সপ্তাহে পাকিস্তানে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের ফাঁকে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিনিধি রিয়াদ আল-মালিকির সাথে বৈঠকের সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই পরামর্শ দিয়েছিলেন, ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব আরো বর্ধিত করা উচিত। এ সময় ফিলিস্তিনি উপদলগুলোর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যেরও আহ্বান জানান তিনি।

বেইজিং আরো পরামর্শ দেয়, ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক সংকটগুলো নিষ্পত্তির জন্য কার্যকর উপায় বের করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার সকল স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণের সাথে একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জোর দিয়ে বলেন, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর শরণার্থীদের উপেক্ষা করে ইউক্রেনের শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর দ্বিমুখী মান সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পশ্চিমারা ইউক্রেনের যুদ্ধাপরাধে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করাকে যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করে। অথচ তারাই যুগোস্লাভিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতিকে সাজামুক্ত বলে ঘোষণা দেয়।

ইজরায়েলের হামলায় ভস্মীভূত ফিলিস্তিনের বাড়িঘর

তিনি আরো বলেন, যুগোস্লাভিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় হামলাকে বৈধ এবং আইনানুগ বলা গোষ্ঠীগুলোর ইউক্রেনে হামলা সার্বভৌমত্বের নীতিকে ক্ষুণ্ন করার দাবি করা অগ্রহণযোগ্য দ্বৈত মানদণ্ড।

সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা উচিত মন্তব্য করে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, সবরাই জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য এবং নীতিগুলো পালন করা উচিত। সব দেশের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগের মূল্য দেওয়া উচিত।

পোস্টটি শেয়ার করুন