ডিএম কপোত নবী: ৪৫ বছরের আশা রানী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ড হুজরাপুর মহল্লার বাসিন্দা। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি হাঁটতে পারছিলেন না। চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচার করতে অনেক টাকা লাগবে কিন্তু গরীব পরিবার এত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করার সামর্থ্য ছিলো না।
অবশেষে আশীর্বাদ হয়ে আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর আধুনিক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ইসমাইল হোসেন।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে রানীর। হিপ জয়েন্টে একটি গোলাকার বল থাকে। বলটি ক্ষয় হয়ে গেলে পা ভাজ হয় না, মানুষ হাঁটতেও পারে না।
ডা. ইসমাইল এর পরামর্শ ও উদ্যোগে আশা রানীর সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। টাকার জন্য যে চিকিৎসা, যে অস্ত্রোপচার করতে পারছিলো না আশা সেটাই বিনা পয়সায় করা হয়েছে। সদর আধুনিক হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সুযোগ মানুষ বিনা মূল্যে পাবেন এখন থেকে।
এ বিষয়ে অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেয়া চিকিৎসক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, আশা রানীর মেয়ে সুমি জানায় ছোট কাল থেকেই তার মা ঠিকমতো হাঁটতে পারতেন না। অনেক টাকা খরচ করে অস্ত্রোপচারও করাতে পারছিল না। সব সমস্যার কথা শুনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এর সুরাহা হয়েছে। হাসি ফুটেছে একটি পরিবারে।
ডা. ইসমাইল আরও বলেন, অবেদনবিদ শওকত মোল্লা, চিকিৎসক মশিউর রহমান, নার্স মৌসুমি ইমাম, ফেরদৌসী খাতুন ও নাসিমা খাতুনের সহযোগিতা নিয়ে অস্ত্রোপচারটি গত ৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রোগীকে হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় এন্টি বায়োটিকসহ অন্যান্য ঔষধও দেয়া হয়েছে।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মমিনুল হক বলেন, ব্যয়বহুল হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট অস্ত্রোপচারটি জটিল ও কঠিন। দক্ষ সার্জনের অভাবের কারণে জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে এমন অস্ত্রোপচার করা হয় না।
তিনি আরও জানান, সাধারণত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজধানী ঢাকা ও দেশের বাইরে উন্নত হাসপাতালগুলোতে এই ধরনের অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জেও এ অস্ত্রোপচার হবে।
তত্ত্বাবধায়ক আরও জানান, চিকিৎসা সেবা ও অগ্রগতিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। সদর আধুনিক হাসপাতালের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিলো ৩০ ডিসেম্বর। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জেই নয়, দেশের কোন জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে এর আগে কোথাও এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়নি বলেই তাঁরা জানেন।
এদিকে অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ আছেন আশা রাণী। অস্ত্রোপচার করার পর এক্স রে ফিল্মে হিপ জয়েন্ট সঠিক ভাবে স্থাপন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডা. ইসমাইল হোসেন।
