বাংলাদেশ রেলওয়ের সেবার মান তলানিতে

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২২

আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী): বাংলাদেশ রেলওয়ের সেবার মান একেবারে তলানিতে। বাস্তবতা বলছে, ভিআইপি কোটার ভিড়ে সাধারণ মানুষ টিকিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ক্ষমতাধর দেখে টিকিট দিতে তদবির শুনতেই ব্যস্ত থাকেন রেলকর্মকর্তারা। এসি টিকিট পাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য ভাগ্যের ব্যপার। রেলের প্রায় সকল কর্মকর্তা তদবিরের বিষয়টি স্বীকার করলেও গতকাল রেলওয়ে থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকিট বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই।’

অন্যদিকে আদালত রেল কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘রেল সরকারি সম্পত্তি। এই সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকার আপনাদের দিয়েছে। আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এগুলো ঠিক হতে আর কত দিন সময় লাগবে? দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর হয়ে গেছে।’ আদালত আরও বলেন, ‘রেলওয়েতে কিছু সিন্ডিকেটের কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সেবার মান তলানিতে। টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে ট্রেনের আসন ও খাবারের মান- সবই নিম্নমানের। তুলনামূলক নিরাপদ ও সাশ্রয়ী এই বাহনে চড়তে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে প্রতিযোগিতা করে। অথচ বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করা হচ্ছে। রেলের সেবার মান বাড়াতে বর্তমান সরকারের আগ্রহ ব্যাপক; কিন্তু কর্মরতদের অধিকাংশের মনোভাব কেবল চাকরি করে যাওয়া। কর্তাব্যক্তিরা চড়েন আকাশযানে। ট্রেনে চড়ে যাত্রীদুর্ভোগ দেখবেন এমন চিন্তাও তাদের কম। কেবল তা-ই নয়, দুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরলে বিরক্তবোধ করেন রেলের নীতিনীধারক কর্তা বাবুরা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রাষ্ট্রায়াত্ত্ব গণপরিবহন রেলের সেবা বাড়াতে বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন- এমনটি জানা যায়নি। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির ৬ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল পাঠানো ব্যাখ্যায় নতুন কোনো তথ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। তুলে ধরা হয়েছে উন্নয়নের ফিরিস্তি। সেবার মান খারাপের পেছনে দেখানো হয়েছে খোঁড়া যুক্তি। খবর আমাদের সময়

গত তিন বছরে এক কর্তাব্যক্তির সফর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি বেশির ভাগই চড়েন আকাশযানে। তিন বছরে সর্বোচ্চ তিনবার হয়ত ট্রেনে গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন। বাকি সময় আকাশপথে ভ্রমণের তথ্য মিলেছে। এমনকি বর্তমানে ঢাকার বাইরে থাকা ওই ব্যক্তির ভ্রমণসূচিতে আসা-যাওয়ায় বিমানে চড়ার তথ্য রয়েছে। তিনি আগামী ২৮ জুলাই ঢাকায় ফেরার কথা। অন্য কর্মকর্তারাও আকাশপথে ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যদিও ৩ নম্বর গ্রেড বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তিদের বিমানে চড়তে আইনি বাধা নেই। অন্যদিকে তারা ট্রেনে চড়লেও পান কোটার সুবিধা; থাকে কার্ড-পাস। ফলে টিকিট পেতে সমস্যা নেই। আবার টিকিট কেনার টাকাও দিতে হয় না তাদের। তাছাড়া তাদের ভ্রমণে কেবিন, এসি-চেয়ার সুবিধা রয়েছে। ক্যাটারিং সার্ভিসের সৌজন্যে খাবারও পেয়ে থাকেন কেউ কেউ। সেজন্য ট্রেনে ভ্রমণ করলেও সত্যিকারের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়ে না তাদের। এ কারণে নজরে নেই ট্রেনের ছেঁড়া আসন, ব্যবহারের অনুপযুক্ত টয়লেট কিংবা টিকিট সংকটের বিষয়টি। পরিচালক বা তার চেয়ে উঁচু পদমর্যাদার রেলকর্মকর্তারা ট্রেনের বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত। তাই সেবার তলানি দশা তাদের অনুধাবনের সুযোগ হয় খুবই কম।

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ১৫ দিন ধরে আন্দোলন করছেন মহিউদ্দিন রনি নামের এক শিক্ষার্থী। এর ধারাবাহিকতায় গত দুদিন রেলের অনিয়ম ও সেবার মান নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করার কথা উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, তা না হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা, টিকিট কালোবাজারি ও ছাদে যাত্রী পরিবহন বন্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ ও ব্যাখ্যা ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রেল কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। সেদিন শুনানি ও প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।

কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির একক অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে আসা খবর নজরে এলে আগের দিন একই বেঞ্চ রনির অবস্থান বিষয়ে জানতে চান আদালত। একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি জানার পর কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা-ও জানতে চান আদালত।

শুনানির একপর্যায়ে আদালত রেল কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘রেল সরকারি সম্পত্তি। এই সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকার আপনাদের দিয়েছে। আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এগুলো ঠিক হতে আর কত দিন সময় লাগবে? দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর হয়ে গেছে।’ আদালত আরও বলেন, ‘রেলওয়েতে কিছু সিন্ডিকেটের কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। উনি (মহিউদ্দিন রনি) আন্দোলন করছেন। টিকিট পেলেন না কেন?’

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বক্তব্য পাঠিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সেখানে বলা হয়- টিকিট ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়মিত মনিটরিং করা হয় এবং যাত্রী হয়রানির কোনো অভিযোগ রেলওয়ের কারও বিরুদ্ধে উঠলে তা তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়েতে টিকিট কালোবাজারির বিরুদ্ধে নানাবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তা ছাড়া অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে এক ব্যক্তি সাত দিনে সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি রেলওয়ের টিকিট যেন কিনতে না পারেন, টিকেটিং সিস্টেমে সে ব্যবস্থা রাখা আছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে অনলাইন কোটার টিকিট ব্লক করা বা টিকিট বুকিং করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া অনলাইন বা কাউন্টার (অফলাইন) টিকেটিংয়ে বাংলাদেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার রাখা রয়েছে। টিকিট প্রাপ্যতা সাপেক্ষে যে কোনো নাগরিক টিকিট কিনতে পারেন। বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকিট বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই।

যদিও বাস্তবতা বলছে, ভিআইপি কোটার ভিড়ে সাধারণ মানুষ টিকিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ক্ষমতাধর দেখে টিকিট দিতে তদবির শুনতেই ব্যস্ত থাকেন রেলকর্মকর্তারা। এসি টিকিট পাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য ভাগ্যের ব্যপার। রেলের প্রায় সকল কর্মকর্তা তদবিরের বিষয়টি স্বীকার করলেও গতকাল রেলওয়ে থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকিট বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই।’
জনবল সংকটের কথা তুলে ধরেছে রেলওয়ে।

বর্তমান জনবল কাঠামো অনুযায়ী টিটিই পদ মঞ্জুরি ৩৬৯টি, কর্মরত ১২২ জন, শূন্য রয়েছে ২৪৭টি পদ। টিসি পদ মঞ্জুরি ৩৬৩টি, কর্মরত ১১৬ জন। অর্থাৎ টিকিট চেকিং কার্যক্রমে যুক্ত অধিকাংশ পদ খালি থাকায় চেকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। রেলওয়ে দাবি করেছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত ২১৮টি। বর্তমানে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা ৩৬৬। এর মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ১০৪টি, আন্তঃদেশীয় ৮টি এবং লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ২৫৪টি। গত ১৩ বছরে ১৪৮টি ট্রেন বেড়েছে; কিন্তু গত ১৩ বছরে কী পরিমাণ অর্থ সরকার বরাদ্দ দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী কতটুকু যাত্রীসেবা নিশ্চিত হয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই রেলওয়ের ব্যাখ্যায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কার্যকর অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাব এবং লোকোমোটিভ ও কোচ সংকটের কারণে কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না রেলওয়ে। বর্তমানে যাত্রীবাহী কোচের ভয়াবহ সংকট রয়েছে। রেলওয়েতে অনেক মিটারগেজ ও ব্রডগেজ কোচ আছে; কিন্তু এগুলোর ভারী মেরামত করা হয় না অর্থাভাবে। বহরে নতুন কোচ যুক্ত হলে পুরনোগুলোর গুরুত্ব কমে। সেগুলো ভারী মেরামত তথা সিডিউল জেনারেল ওভারহলিং (জিওএইচ) করতে না পারার পেছনে তাদের যুক্তি- রাজস্ব খাতে বরাদ্দের ঘাটতি ও জনবল স্বল্পতা। কেবল পশ্চিমাঞ্চলেই ১২০টি ব্রডগেজ কোচ ও ১২৫টি মিটারগেজ কোচের অবস্থা খারাপ। অথচ রেলওয়েতে প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় হচ্ছে।

রেলে ব্যয় হয় দুই ধরনের। একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে, অন্যটি অনুন্নয়ন খাতে অর্থাৎ রেল পরিচালনায় দৈনন্দিন খরচ। উন্নয়ন বাজেটের অধীনে থাকা বেশির ভাগ প্রকল্পই নতুন রেললাইন ও সেতু নির্মাণ, ইঞ্জিন-বগি ক্রয় এবং অবকাঠামো নির্মাণসংক্রান্ত। অনুন্নয়ন খাতে বেশিরভাগ ব্যয় হয় রক্ষণাবেক্ষণ ও বেতনভাতায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে রেলের সংশোধিত বাজেট ১৬ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পরিচালন খাতে বরাদ্দ ৩ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা আর উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ১২ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। অতীতের যে কোনো সরকারের তুলনায় রেলওয়ের উন্নয়নে বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের পর ২০১১-১২ অর্থবছরে পরিচালন খাতে বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। ৫ শতাংশ বেড়ে পরের বছর তা হয় এক হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। এর পর বাড়ে ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ। এভাবে পর্যায়ক্রমে ২৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ৭১ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৭৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ৯৮ দশমিক ৬২ শতাংশ, ১২২ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ১৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭৭৯ কোটি ৯০ লাখ টাকায়। আর উন্নয়ন খাতে ২০১১-১২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল দুই হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। এটি ৪৫৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকায়। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ২৪ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০টি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ৮২টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমান অর্থবছরে ৩৪টি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং ৫টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প চলমান; কিন্তু লোকসান থেকে বের হতে পারছে না সংস্থাটি। অবশ্য লোকসান কমানোর চিন্তাও নেই। কর্মকর্তাদের যুক্তি- রেল রাষ্ট্রায়ত্ত সেবা খাত। লোকসান হলেও সমস্যা নেই। এমন মনোভাব পোষণের কারণে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের বিস্তর ফারাক। ট্রেন পরিচালনায় যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে খরচ হয় ২ টাকা ৪৩ পয়সা, আর আয় হয়েছে মাত্র ৬২ পয়সা। রেলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি খরচ পৌনে তিন টাকা এবং আয় ৬২ পয়সা দেখানো হয়েছে। একই অর্থবছরে পণ্য পরিবহনে কিলোমিটারে টনপ্রতি খরচ ৮ টাকা ৯৪ পয়সা এবং আয় দেখানো হয় ৩ টাকা ১৮ পয়সা।

বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করলেও ট্রেনের সেবার মান এক ইঞ্চি বেড়েছে বলে মনে হয় না। উপরন্তু ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা আর যাত্রাবিলম্ব। এর নেপথ্যে কারণ হলো- গত কয়েক বছরে রেলে যে পরিমাণ বিনিয়োগ ও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নের মতো দক্ষ কর্মকর্তার অভাব রয়েছে। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে- যাত্রীসুবিধা বা আয়বর্ধক প্রকল্প না নিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ কেনাকাটার প্রকল্প নেওয়া। এক্ষেত্রে রাজনীতিক, ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের ব্যক্তিস্বার্থ কাজ করেছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন