স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন বাঘা পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৯ ডিসেম্বর। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র পদে পদপ্রার্থী হয়েছেন আটজন।
মনোনয়ন যাচাই-বাছাই এর পর পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে সরব হয়ে উঠেছে প্রার্থীরা। প্রচার প্রচারনায় পার করছেন ব্যাস্ত সময়। এদের মধ্যে অন্যতম প্রার্থী সাবেক মেয়র আক্কাস আলী। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মোড়কে কর্মী-সর্মথকদের নিয়ে দিনরাত নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি।
১৯৯১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে তিনি ছিলেন দুই বারের ইউপি চেয়ারম্যান ও বাঘা পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হলে তিনিই জয়লাভ করবেন এমন আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি ও তাঁর কর্মী সমর্থকগন।
নির্বাচনী এলাকায় অনুসন্ধান করে দেখা যায়, অধিকাংশ ভোটারের মত, এখানে মেয়র পদে ৮ প্রার্থীর মধ্যে রিজার্ভ ভোটে এগিয়ে রয়েছে এই জনপদের জনতার নেতা হিসেবে খ্যাত আক্কাস আলী। গরীব, দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে থাকায় পৌর এলাকার প্রানের নেতা হিসেবেই তাঁর অবস্থান বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেন। তাঁর জনসমর্থন অনেকটায় রিজার্ভ ফান্ডের মতো। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, প্রতিক নয় পৌর নির্বাচনে প্রার্থীর ব্যাক্তি ইমেজ ইস্যুতেই জয় পরাজয় নির্ধারণ হবে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত নারী কমিশনার পদে ১৩ এবং পুরুষ কমিশনার পদে ৪০ জন মোট ৬১ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। গত ৩ ডিসেম্বর যাচাই বাছাইয়ে সকল প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হিসাবে স্বীকৃতি পায়। আগামী ১০ডিসেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর একদিন পর ১১ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এরপর পৌর এলাকায় শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনা। তবে মেয়র পদে দু-একজন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দ না পেলেও প্রার্থীদের নির্ঘুম প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠছে নির্বাচনী এলাকা। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র ও পৌর যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু। প্যানেল মেয়র থাকাকালীন তিনি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন এবং সব সময় মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন তাই ভোটাররা তাকেই রায় দিবেন এমন দাবিতে বিজয়ের শেষ হাসি তিনি হাসবেন এমন প্রত্যাশা করলেও ভোটাররা বলছেন ভিন্ন কথা। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নয়, প্রার্থীদের ব্যক্তি ইমেজের ওপরেই পড়বে ভোটারদের ভোট।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফশিলের পর থেকেই দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের আস্থাভাজন নেতা আক্কাস আলী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেয়ায় অনেকটাই পাল্টেছে পৌর নির্বাচনের সমীকরণ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি পৌরসভার প্রত্যেকটি অলি গলি রীতিমতো চষে বেড়াচ্ছেন তিনি ও তার কর্মী সমর্থকরা। এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়েও সাধারণ মানুষের সাথে করছেন গণসংযোগ, মতবিনিময়, দোয়া, সমর্থন ও মূল্যবান ভোট চাইছেন ভোটারদের কাছে।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর ) সন্ধায় পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কলিগ্রাম এলাকায় গণসংযোগকালে মেয়র প্রার্থী আক্কাস আলী বলেন; আমি ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। দলের পক্ষে ও সাধারণ জনগণের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে বারবার হামলা মামলার শিকার হয়েছি। বারবার কারাবরন করতে হয়েছে। আমার জনপ্রিয়তায় আমাকে বারবার বিরোধি জোট সহ নিজ দলের কুচক্রীদের চক্রান্তের শিকার হতে হয়েছে। আমার ভরসা মহান আল্লাহ্ আমার আস্থা আপামর জনতা। ভোটারদের প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তাঁরা আমাকে মুল্যায়িত করবেন। সেই আস্থা ও বিশ্বাস নিয়েই সকলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমি কারো সমালোচনা করবো না। জনগনের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে শুধু একটাই দাবি আমার, তা হল সুষ্ঠ নির্বাচন। কে ভাল, কে মন্দ আর কে বেশী জনপ্রিয় তার রায় ২৯ ডিসেম্বরে মানুষ ব্যালটের মাধ্যমেই দিবে।
বাঘা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মজিবুল আলম জানান, এই পৌর সভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩১ হাজার ৬৫৯ । এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৮১২ ও নারী ভোটার ১৫ হাজার ৮৫৭ জন। এখানে ইভিএমের মাধ্যমে ১১ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ১১ ডিসেম্বর।