নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে রাজশাহী-পার্বতীপুর রুটে চলাচল করা উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এটি ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর পর রেল কর্তৃপক্ষের নানা কারনে ট্রেনটি চালু করা সম্ভব হয়নি। অল্প ভাড়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে নিরাপদ ভ্রমণের একমাত্র ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় জনদূর্ভোগে পড়েছেন এই রুটটিতে চলাচলকারি হাজারের অধিক যাত্রী।
বন্ধ থাকা লাভজনক উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেসরকারি খাতে দেয়ার পাঁয়তারা করছেন রেল কতৃপক্ষ বলে জানাগেছে।
পশ্চিম রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাওয়ার লিংক (ইঞ্জিন) ও জনবল সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। ট্রেনটি চালু করার উদ্যাগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবে নাগাদ ট্রেনটি দ্রুত চালু হবে নিদৃস্ট করে বলতে পারছেনা কেউ।
উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাতিলের সময় রেল কতৃপক্ষ সে সময় নাশকতার আশংকায় ট্রেনটি বন্ধ করার ঘোষনা দেন।২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পশ্চিম রেলের সহকারী চিফ অপারেটিং অফিসার মো. আব্দুল আউয়াল স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, হরতাল, অবরোধ ও নাশকতা এড়াতে ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার থেকে উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল বন্ধ থাকবে।পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। আমরা মনে করছি ট্রেন চালানো নিরাপদ নয়। সেজন্য স্থগিত করেছি।সেই থেকে অদ্যবধি বন্ধ রয়েছে ট্রেনটি।
পশ্চিম রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেত বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে। আর পার্বতীপুর থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করত ভোট ৪টা ১৫ মিনিটে। এই ট্রেনে ৫টি যাত্রীবাহী কোচ ও একটি লাগেজ ভ্যান ছিল। এছাড়া ছোট-বড় সব স্টেশনে থামে এই ট্রেনটি। ফলে যাত্রীরা এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারতো।
ভোরে পার্বতীপুর থেকে এই ট্রেনটি ছাড়ায় এটি ছিল কর্মজীবী মানুষদের পছন্দের বাহন ছিল। এই ট্রেনে বগুড়ার সান্তাহার, নওগাঁর আহসানগঞ্জ, নাটোর, আব্দুলপুর এলাকায় কর্মরত যাত্রীরা বেশি চলাচল করতেন। ট্রেনটি খুব সকালে হওয়ার কারণে অনেকেই রাজশাহীতে চিকিৎসার জন্য আসত উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনে। ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে ছাড়ার পরে জয়পুরহাট পৌঁছানো মাত্র যাত্রীতে ভর্তি হয়ে যেত। ট্রেনটিতে কোচের সিট ক্যাপাসিটির বেশি যাত্রী পরিবহন করা হতো ট্রেনটিতে।
জানা গেছে, এই ট্রেনের মাধ্যমে কাঁচামাল পরিবহন, আত্রাই থেকে মাছ ও সবজি ও বিভিন্ন স্টেশন থেকে সবজিও নিয়ে আসা হতো। বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বহন করা হতো। এতে ব্যয় কম হওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হতো সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ভুঁঞা বলেন, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ হওয়া প্রায় ৮ মাস হতে গেলো। ট্রেনটি চালক সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে। ট্রেনটি আবার চালুর জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আশা করা হচ্ছে আগামী দু-এক মাসের মধ্যে ট্রেনটি চালু হতে পারে।
তবে একাধিক সূত্র বলছে,রেলকর্তৃপক্ষ মেইল ট্রেনটি বেসরকারি খাতপ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।