ভারপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সাধারণ সম্পাদককে হত্যাও করতে চেয়েছিলো শান্ত! সে নিজে বিবাহিত ও মাদকসেবি

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ১০:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান শান্ত। ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশ, ধানের শীষের পক্ষে ভোট করা, মাদকসেবি ও পদলোভী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার পরপরই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমিকে সরিয়ে বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা ও ব্লাকমেইলিং পন্থা অবলম্বন করে। তার ইচ্ছে সে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হবে। এই লোভে মত্ত হয়ে দিনরাত অর্থ খরচ করে সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। অথচ সে নিজেও বিবাহিত ও ছাত্রদলের করার অভিযোও আছে। ধানের শীষের পক্ষে ভোট করার অভিযোগও আছে তার নামে। ভারপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সাধারণ সম্পাদককে হত্যা পর্যন্ত করতে চেয়েছিলেন এই শান্ত।

বিভিন্ন অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, হাসিবুল হাসান শান্ত প্রায় ২৮ লাখ টাকা খরচ করে কমিটির সময়। শান্ত ২০২১ সালের ১লা জানুয়ারি বিয়ে করে নওগাঁর মোসাঃ সুলতানা জান্নাত নামের একটি মেয়েকে। সুলতানা নওগাঁর সদর উপজেলার জলছত্র এলাকার সাইদুর রহমানের মেয়ে। জেলা কমিটি হওয়ার সময়ও বিবাহিত হিসেবে প্রচার হয়। তবে সে সময় শান্ত এই পদ পেতেই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ সব ধামাচাপা দেয়।

ফেনসিডিল খাচ্ছে এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শান্ত

সূত্রে জানা যায় ; জেলা কমিটি হওয়ার পরপরই শান্ত রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক এক শীর্ষ নেতার সাপোর্টে শান্ত প্রকাশ্যে জেলার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি র সাথে বিরোধিতা শুরু করে। পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে সাধারণ সম্পাদক কে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে। সর্বশেষ কাটাখালি পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের একটি ভিডিও তৈরি করে তা প্রচার করার জন্য রাজশাহীতে বিভিন্ন সাংবাদিকদের কাছে যায়। কিন্তু ভিডিও সন্দেহজনক হওয়ায় রাজশাহীর সাংবাদিকেরা পাত্তা দেননি। পরে ঢাকা গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে বিশেষ তদবির করে যমুনা টেলিভিশনে সেই ভুয়া ভিডিও প্রচার করানো হয়। বর্তমানে শান্ত ঢাকায় অবস্থান করছে বলে নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন সূত্র। গত তিনদিন আগে রাজশাহী থেকে পাঁচজন বিমানে রাজশাহী যায় বলে জানা গেছে।

গত ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ২ঃ৩০ মিনিটে নগরীর ঘোষপাড়া মোড়ে মদ্যপ অবস্থায় রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগে যুগ্ম সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্তের নেতৃত্বে নয়নসহ ৩৫-৪০ ঘোষপাড়া মোড়ে একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করে। তাদের টার্গেট ছিলো মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে অবস্থান করা সাধারণ সম্পাদক জাকিরকে কৌশলে ডেকে রাতের আঁধারে খুন করা। এত লোকজনের অস্ত্রসহ জমায়েত দেখে স্থানীয় লোকজন তাদের জমায়েতের কারণ জিজ্ঞেস করলে শান্ত বলে যে, অমি নামের একজনকে খুন করতে এসেছি বলে অন্যরাও হাতে থাকা চাকু, লোহা প্রদর্শন করে, এসময় তারা জাকির হোসেন অমির নাম উচ্চারণ করে গালিগালাজ শুরু করে। এলাকাবাসীর সাথে তর্ক বিতর্ক শুরু করলে এলাকাবাসী একসাথে জড়ো হয়ে তাদের গণধোলাইয় দেয়।

এসময় স্থানীয়দের হাত থেকে বাঁচতে শান্ত ও তার সহযোগীরা দুইটি মোটর সাইকেল ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাজপাড়া থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে মোটর সাইকেল দুটি আটক করেন। পরেরদিন স্থানীয়দের সাথে আপোষ ও ভুল স্বীকার করে থানা থেকে মোটরসাইকেল নেয় তারা।

অন্তত ৪ জন কেন্দ্রীয় নেতার কাছে জানা গেছে যে, শান্ত রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার পরপরই সাধারণ সম্পাদকের নামে আমাদের কাছে এসে বিভিন্ন অভিযোগ দিতো। যাতে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে সুযোগে সে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হবে।

জেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন ; বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শান্ত সবসময় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে আমাদের কাজ করতে বলতো।

জেলা ছাত্রলীগ নেতা জাফর সাদিক অভি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন; রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলা বন্ধ করতে কিছু মানুষ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আশায় ছাত্রলীগ নিয়ে যে নোংরা খেলায় লিপ্ত হয়েছে সেখানে কখনোই সফল হবেনা। ১নং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক,”শান্ত” নিজে বিবাহিত, মাদকসেবী, পদলোভী হয়ে জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত হওয়ার আশায় যে নোংরামি শুরু করেছে, তা দমন করার জন্য “বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সরাসরি হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ রইলো।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি বলেন ; রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর কিছু ব্যক্তি আমার ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। বিশেষ করে যারা সভাপতি সেক্রেটারি হতে চেয়েছিলো। শান্ত তাদের অন্যতম। আমার বিরুদ্ধে সব মিথ্যা অভিযোগের মুল হোতা শান্ত। বারবার সে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার লোভে সে এমন কোন কুটকৌশল নেই যে ব্যবহার করেনি।

পোস্টটি শেয়ার করুন