রাজশাহী প্রতিনিধি: নিজ মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অসহায় বাবা। সংবাদ সম্মেলনে এই মামলায় পুলিশের গড়িমসি, চার্জশীট প্রদান না করা ও আসামীদের গ্রেপ্তার না করার অভিযোগ করা হয়েছে।
২১ নভেপম্বর সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ভূক্তভোগী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার বালিয়া পশ্চিম আদর্শগ্রামের বাবা শামিম হোসেন (৩৩)।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ৯ জুলাই আমি ও আমার স্ত্রী দুপুরে আমার বড় মেয়ে সামিরা জান্নাতুন ফেরদৌস (১১), ছোট মেয়ে সালমা (৮) ও ছেলে আমির হামজাকে বাড়ীতে রেখে শ্বশুরবাড়ী যান। বিকেলে বাড়ীতে এসে বড় মেয়ে জান্নাতুন ফেরদৌসকে ডাকাডাকি করে খুঁজতে থাকি। এক পর্যায়ে বসত ঘরের ভিতর গিয়ে দেখে ঘরের চালের সাথে বাঁশের সাথে কালো রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। তবে পদুটি মেঝেতে লেগে আছে। এই সময় চিৎকার করলে আশেপাশের সকলেই ছুটে এসে লাশ রশি থেকে খুলে নামায়।
পরে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ঘটনার দিন একই এলাকার সানাউল্লার ছেলে শামীম আমার মোবাইলে ফোন করে অবস্থান জানতে চাই। তখন সন্দেহ হয় তারা আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। সেদিন বাড়ীতে ফিরে এসে অন্যান্য দিনের মত স্বাভাবিক আচরণ দেখতে পাইনি।
পরে গত ২৩ জুলাই শামিম, রকি, টিয়া আলম গোলাব ও বাবুকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। এর পর থেকে থানা পুর্লিশ এই মামলার আসামীদের ধরতে গড়িমসি শুরু করে। তারা কোন ধরনের সহযোগিতা করেনি। এই মামলায় কোন আসামী পুর্লিশ ধরেনি। একজন আসামীকে র্যাবে গ্রেপ্তার করে ও আরেক আসামী হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসে আমাদের ভয়ভীতি ও মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি প্রদান করছেন।এছাড়া স্বাক্ষীদের নানান ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
স্বাাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানোর কারণে তারাও এখন আমার সাথে আর চলাফেরা করছে না। মামলার এতো দিনেও থানার ওসি ও তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই জীবন চার্জশীট প্রদান করছে না। আমি নিজে যোগাযোগ করলে আমাকে নানান ভাবে হয়রানি করছে।
আমি গরীব মানুষ ও পাশে কোন লোক না থাকায় পুলিশ দূর্বল ভেবে একের পর এক হয়রানি করে যাচ্ছে । তিনি দাবি জানান যাতে এই হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত করে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করা হয় ও আসামীদের দৃষ্ট্রান্তমূলক শাস্তি হয়।
এই বিষয়ে কাশিয়াডাঙ্গা থানার কৈশবপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জীবন চন্দ্র বর্মনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাক্ষী প্রদানের জন্য জেলার বাইরে থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাসুদ রানা বলেন, এই মামলার সকল কিছু নিয়ম অনুযায়ী অগ্রগতি হচ্ছে। দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। বাদীদের সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানও করা হয়েছে। এছাড়াও ভিকটিমের ডিএনএ টেস্ট করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান এ-ই পুলিশ কর্মকর্তা।