রাজশাহীতে নানা আয়োজনে মহানবমী উদযাপন, কাল বিজয়া দশমী

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৮:৪১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৪, ২০২২

আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী): ৪ আগস্ট মঙ্গলবার মহা ধুমধামের সাথে রাজশাহীতে পালিত হয়েছে মহানবমী। সকাল থেকে নানা আয়োজনে রাজশাহীর পূজা মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয় মহানবমীর আনুষ্ঠানিকতা।

মহানবমীতে ভক্তদের দেওয়া ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজা দেয়া হয় দেবীদুর্গার। এছাড়া নীলকণ্ঠ, নীল অপরাজিতা ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে মহানবমীর বিহিত পূজা হয়।
এছাড়া মহানবমীতে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবীদুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হয় ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়।

সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী , এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে দেবি স্বর্গে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।

জানা গেছে আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টায় শুরু হবে বিজয় দশমী পূজা, পুষ্পাঞ্জলী, সিঁদুর খেলা এবং তারপরই হবে দর্পণ ও বিসর্জন ।

রাজশাহী পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে এবার রাজশাহীতে ৪৫০ টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।

শারদীয়া নবরাত্রির সূচনা হয় আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত। এ বছর নবরাত্রি শুরু হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে, যা চলবে বুধবার ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

শাস্ত্র মতে, মহিষাসুরকে বধ করার জন্য দেবী পার্বতী দুর্গার রূপ ধারণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। মহিষাসুর ছিল এক ভয়ংকর অত্যাচারী ও শক্তিশালী অসুর। যার সঙ্গে যুদ্ধ করা সমস্ত দেবতার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল একটা সময়।
অসুর রাজ ও দৈত্যসেনাদের বিশ্বাস হয়ে গিয়েছিল যে তারা এতটাই ক্ষমতাশালী যে স্বর্গরাজ্য জয় করে মর্তবাসীদের রাজ করতে সক্ষম। নিজেকে ক্ষমতাবান মনে করে সারা পৃথিবীর মানুষকে অতিষ্ট করে তোলেন। দেবতারাও তাঁকে থামাতে পারেন না।স্বর্গরাজ্যে হানা দিলে সব দেবতারা মহাদিদেবের কাছে ছুটে যান ও এই সমস্যা থেকে প্রতিকার চেয়ে প্রার্থনা করেন। তখন ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর তাঁদের শক্তি মিলিয়ে তৈরি করেন দেবী দুর্গাকে। তাঁকে প্রদান করা হয় নানাবিধ অস্ত্র।

সেই সময় মহাদেব জানিয়েছিলেন, অসুরকূলকে বিনাস করতে পারবেন একমাত্র মহিষমর্দিনী। তাই আদিশক্তি দুর্গার রূপ ধারণ করে মহিষাসুরের সঙ্গে টানা ৮ দিন যুদ্ধ করে নবম দিনে মহিষাসুরকে বধ করেন। সেই থেকে দুর্গাপূজা শুরু হয়। মহানবমীর দিন নিয়ম মেনে দেবীর পুজো করলে সাফল্য, শক্তি ও সম্পদ আসে। সিদ্ধিদাত্রী দেবী মহাবিদ্যার আটটি সিদ্ধি দান করেন। সেইকারণে এদিন সমস্ত ভক্তরা আন্তরিক চিত্তে তাঁর পূজা করেন। একং দশমীর দিন দেবী দুর্গার বিসর্জন হয় নদী বা সমুদ্রে। তিনি দেবলোকে ফিরে যান।

উল্লেখ্য, মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জনের মধ্যদিয়ে ৫ অক্টোবর মহাদুর্গোৎসব শেষ হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন