রাজশাহীতে ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ভাবনা: প্রেক্ষিত অবকাঠামো’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজশাহী গণপূর্ত জোন, গণপূর্ত অধিদফতর আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ভাবনা: প্রেক্ষিত অবকাঠামো’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে অবস্থিত রাজশাহী গণপূর্ত জোন সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন; বাঙালির রয়েছে অনেক গৌরবাগাথা ইতিহাস। অনেক চড়াই-উৎরায় পেরিয়ে আজ বাংলাদেশ নামক ভূখন্ড পেয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন মহামানব। ঘাস থেকে বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন করে তিনি এক মহান নেতাই পরিণত হয়েছেন। তার মতো খুব কম নেতাই পৃথিবীর ইতিহাসে এমন স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি এমন কাজ করতেন যে মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিতেন। মুক্তিকামী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি সারাজীবন গ্রেফতার কারাবরণ গ্রহণ করে নিয়েছিলেন।
মেয়র আরো বলেন; বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করার পর প্রথমে ভঙ্গুর দেশকে গড়ে তুলতে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, ৫টি গ্যাসক্ষেত্র নিজ মালিকানায় ক্রয়, কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ করছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাত্র কয়েক বছর দেশটি সকল দিক দিয়ে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ শুরু করার পরই ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। যা বাঙালি জাতির জন্য এক লজ্জাজনক বেদনাদায়ক অধ্যায়।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্মৃতির কথা স্মরণ করে রাসিক মেয়র বলেন, ছেলেবেলায় ধানমন্ডির ৩২নং বাসায় দুইদিন আমরা দুই ভাই একসাথে থাকার সৌভাগ্য হয়। সেখানে জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো সুযোগ হয়। আরেকটি স্মৃতি আমাদের ঢাকার বাড়িতে ঈদের দিনের কথা মনে পড়ে। সেদিন বঙ্গবন্ধু তার একান্ত সহকর্মী আমার পিতা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসেন। গাড়ি থেকে নেমে হেনা বলে ডাকতে আমার পিতা সিড়ি দিয়ে দৌড়ে নেমে এসে ঈদের আলিঙ্গন করেন। তখন বঙ্গবন্ধু আমাদের দেখে ডাক দিয়ে বলেন, আয় আমার কাছে। এরপর তিনি আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন আর পিঠে থাবা দেন। আজও আমার সেই হৃদয়ে কম্পন ধরিয়ে রেখেছে। তাঁর সেই আদর্শ নিয়ে এগিয়ে চলেছি। মানুষ চলে যায় রেখে যায় তার কর্মময় স্মৃতি। বঙ্গবন্ধু চলে গেছেন কিন্তু রেখে গেছেন কীর্তি।
মেয়র আরো বলেন; বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নে ডেল্টাপ্ল্যান প্রণয়ন করেছেন। সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীর উন্নয়নেও বিশেষ অবদান রেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিটি কর্পোরেশনের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। প্রকল্পটির আওতায় নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছেন। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় রাজশাহীকে এগিয়ে নিতে চাই।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নুরুল্লাহ।
মুখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান।
সভায় রাজশাহী গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মিসবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী।
আলোচনা সভা শেষে জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাজশাহী গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফজলুল হক।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জিএম অসীম কুমার তালুকদার, অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার রশীদুল হক, আইইবি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল বাশার, সড়ক ও জনপথ রাজশাহীর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদিকুল ইসলাম, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক, গণপুর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ হারুন অর রশীদ, নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মোস্তাফিজুর রহমান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীগণ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।