‘রাজশাহীতে সমাবেশের নামে বিএনপি উচ্ছৃঙ্খলতা করলে বরদাশত করা হবে না’: খায়রুজ্জামান লিটন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীতে সমাবেশের নামে বিএনপি কোন রকম উচ্ছৃঙ্খলতা করলে বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিস্কার কোন রকমের উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাশত করবো না। আমাদের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রেখেছি, আরো রাখবো। তারা (বিএনপি) যেখানে অনুমতি পাবে, সেখানে সমাবেশ করুক। কিন্তু অশালীন কথা, অরাজনৈতিক কথা এটি যেন তারা না বলেন। কোন ভাঙচুর, জানমালের কোন ক্ষয়ক্ষতি বা কোন রকম বাজে চিন্তুা যদি তাদের মধ্যে থাকে, তাহলে তারা যেন সেটা পরিহার করে। তা না হলে আমরা ধরে নিব, তারা পায়ে পা লাগিয়ে লড়াই করতে চান। সেক্ষেত্রে আমরা ছেড়ে কথা বলবো না।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত বিএনপির অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে রামেক হাসপাতাল ঘুরে লক্ষ্মীপুর মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি নয়া পল্টনে তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়ার পরও তারা সেটি গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমাদের লাখো কর্মী ঢাকাতে প্রস্তুত থাকবে। তারা বলছে, ‘১০ তারিখেই আখেরি লড়াই এবং এই লড়াইয়ের পরে তাদের কথামতো দেশ চলবে।’ এগুলো আমরা মনে করি ‘কুঁজোর চিত হয়ে শোয়া বা ছেঁড়া কাথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা-এই রকম বিষয়। যেটা তাদের সক্ষমতা নেই, সামর্থ নেই, অতীতে কোনদিন করে দেখাতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না।
তত্ত্বাবধায়ক প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি বলছে, ‘কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না, নির্বাচন হতেও দেব না।’ এ ক্ষেত্রে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের দল আওয়ামী লীগ সাফকথা জানিয়ে দিয়েছে, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন করার আর কোন সুযোগ নেই।
বিএনপির উদ্দেশে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, যদি নির্বাচনে আসেন তাহলে কিছু আসন পেলেও পেতে পারেন। আর যদি না আসেন, ২০১৪ সালেও আটকাতে পারেননি, ২০১৮ সালেও আটকাতে পারেননি, এবারো ইনশাল্লাহ আওয়ামী লীগকে আটকাতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব গতিতে চলতেই থাকবে, উন্নয়ন হতেই থাকবে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ আরো উন্নত হয়ে যাবে, কোথায় যাবে আমরা হয়তো ভাবতেই পারছি না। আর ২০৪১ সালে বাংলাদেশ সত্যি সত্যিই একটি ধনী রাষ্ট্রের কাতারে পৌছে যাবে ইনশাল্লাহ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে কেউ ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে আসলে বাংলার জনগণ, বাংলার মানুষ, রাজশাহীর মানুষ তাদেরকে ছেড়ে কথা বলবে না।
রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী দেয়নি বাংলাদেশের মানুষকে?। খাদ্যে নিশ্চয়তা, দেশের উন্নয়ন, কাঙ্খিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন-সবই দিয়েছেন। আজকে আপনি বেড়াতে যাবেন রবিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুয়াকাটা তিন থেকে চার ঘন্টায় মধ্যে আপনি পৌছে যাচ্ছেন। স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌছে যায় ওই এলাকার টাটকা ইলিশ। কৃষকেরা লাভবান, জেলেরা লাভবান। দেশের মানুষের সবার পকেটে এখন একটু বাড়তি পয়সা আছে। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় স্থানে। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বের এক নম্বর বাংলাদেশ। তার স্বাদ আমরাও পাচ্ছি, পার্শ্ববতী দেশে রপ্তানিও করতে পারছি। এভাবে বাংলাদেশ যখন সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে ক্ষমতায় আসবার জন্য, অন্য কোন কারণ নয়, লুটপাট করবে, আবারো হাওয়া ভবন করবে ইত্যাদি কারণে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে চক্রান্ত করছে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। সভাপতিত্ব করেন রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ হাফিজুর রহমান বাবু। সঞ্চালনা করেন রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রতিটি আন্দোলন ও সংগ্রামে ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে বিএনপি’র দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের রাজনীতি রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন আমাদের এই দেশ। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপি যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে তাদের এই ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথেই রুখে দিবো।
মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য সরকারের অপপ্রচারে ব্যস্ত রয়েছে, করছে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রাজপথে এই অপরাজনীতি ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের মোকাবিলা করবো। আমরা রাজপথে থেকেই সকল আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি । অতীতে রাজপথে ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। রাজপথেই আমরা সকল আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে থেকে আমরা এই দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের মোকাবিলা করবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ ফ ম আ জাহিদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, বন ও পরিবেশ বিয়ষক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক, সদস্য আশরাফ উদ্দিন খান, ইসমাইল হোসেন, মজিবুর রহমান, সৈয়দ মন্তাজ আহমেদ, মতিহার থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের অন্তর্গত সকল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।