নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে যে জমি ক্রয় ও বিক্রয় কে কেন্দ্র করে হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে সেই জমি গোপনে হত্যা মামলার আসামীরা বিক্রি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমিটি মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিক্রি করা যাবে না বলে সাইন বোর্ড দেয়া হয়েছে প্রসাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তুু হত্যা মামলার আসামীরা গোপনে জমিটি বিক্রি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদি কাশিয়াডাঙ্গা ফেত্তাপাড়া মৃত নরুল ইসলামের স্ত্রী মালেকা বেগম (৫০)। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই জমি কেউ বিক্রি করতে পারবে না বলেও জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই।
জানা গেছে, গত ২২-০৯-১৭ তারিখ পবা উপজেলার কৈকুড়ি থেকে শীতলাই যাওয়ার রাস্তার পাসে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ফেত্তাপাড়া এলাকার মৃত নরুল ইসলামের মেজো ছেলে সাহাবুলের (৩৮) গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সাহাবুলের মা মালেকা বেগম (৫০) বাদি হয়ে রাজপাড়া থানার চামারপাড়া এলাকার রাব্বুল ও তার ছেলে সোহেল, রুবেল, লাভলু, বাবুলসহ ৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি তদন্ত ভার দেয়া হয় পিবিআইকে। কিছুদিন পরে ৫ আসামী আদালতে আত্নস্মর্পন করেন। র্দীঘ ৮ মাস হাজতে থেকে আসামীরা উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছে বর্তমানে।
নিহত সাহাবুলের মা মালেকা বেগম বলেন, কাশিয়াডাঙ্গা মোজার খতিয়ান নং ১৪৬২, জেল নং ৫৫, হোলডিং নং ১১৬৩, মোট জমির পরিমান ০৮২৫/ প্রায় ৭ কাঠা। ওই জমি ২৫ লাখ টাকা দামে আমার ছেলে সাহাবুল ক্রয়ের জন্য বায়নামা স্বরুপ ৬ লাখ টাকা ১ নং আসামী সোহেল কে দেওয়ার জন্য কাশিয়াডাঙ্গা ফেত্তাপাড়ার দুলাল হোসেনের ছেলে বাপ্পির উপস্থিতিতে রাজপাড়া দাসপুকুর এলাকার শালুর ব্যবসায়ীক চেম্বারে সোহেল কে প্রদান করে নিহত সাহাবুল। টাকা দেয়ার এক শপ্তাহ পরে জমির বাকী টাকা পরিশোধ করে জমিটি রেজেস্ট্রি দেয়ার কথা ছিল সাহাবুলকে সোহেলের। কিন্তুু পরে সোহেল বাঁকি টাকা না নিয়ে জমিটি সাহাবুলকে রেজেস্টি করে দিতে বিভিন্ন ভাবে টালবাহানা শুর করে। পরে জমিটি ইটের প্রাচীর দিয়ে নিহত সাহাবুল দখল করে নেয়।
দখল নেয়ার পরে গত ১৭-০৯-২০১৭ ইং তারিখ সকাল ১০ টার দিকে সাহাবুল তার দখলকৃত জমিতে গেলে সোহেলসহ ৪ থেকে ৫ জন লোক ওই জমিতে নিয়ে গিয়ে সাহাবুলকে গালিগালাজ করে ও জোরপূর্বক জমিটি দখলে নিতে চায়। এ নিয়ে শুত্রুতা শুরু হয় তাদের মাঝে।
এ ঘটনার পর দিন ২১-০৯-২০১৭ ইং তারিখ দুপুর ২ টার দিকে সাহাবুল দুপুরে বাড়িতে খাবার পরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে সাহাবুলের স্ত্রী বিউটি বেগমের সাথে সন্ধায় মুঠোফোনে সাহাবুলের সাথে কথা হলে তাকে সাহাবুল জানান, সে দাশপুকুর শালুর চেম্বারে রয়েছে। পরে শাহাবুলের স্ত্রী ফের রাত ৯ টার দিকে সাহাবুলকে ফোন করলে তার নাম্বার বন্ধ পায়। পরে শালুর নাম্বারে ফোন করলে শালু সাহাবুলের স্ত্রী বিউটিকে জানায়, রাত ৯ টার দিকে রুবেল, চেম্বার থেকে সাহাবুলকে থানায় যেতে হবে বলে তার সাদা কার গাড়িতে করে নিয়ে গেছে। পরে সারা রাত শাহাবুলের খোজ করে তাকে পায়নি তার পরিবার।
পর দিন ২২-০৯-২০১৭ ইং তারিখ সকালে সাহাবুলের ছোট ভাই মনিরুল জানতে পারে, পাবা উপজেলার কৈকুড়ি হতে শীতলাই যাওয়ার রাস্তার পাসে সাহাবুলের গলা কাটা লাশ পাওয়া গেছে।
হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই আব্দুল মান্নান বলেন,যে হেতু ওই জমি কে কেন্দ্র করেই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। সেই জন্য মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ ওই জমি দখল ও বিক্রি করতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এমন নির্দেশ দেয়া আছে। এছাড়া জমিতে সাইনবোর্ড দেয়া আছে, এ জমি নিয়ে হত্যা মামলা রয়েছে। এ জমি বিক্রয় হবে না।
তিনি আরো বলেন, তার পরেও যদি কেউ ওই জমি বিক্রির চেষ্টা করে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।