

ট্রিবিউন ডেস্ক : সংসদনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে দেশে বিদেশে নালিশ করে কোন ফায়দা হবে না। লাভ হবে না। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। সংসদ নেতার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন সমাপ্ত হয়। অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশটি পড়ে শোনান স্পিকার ড. শিরিন শারমীন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে ২৬৯ জন সংসদ সদস্য প্রায় ৪০ ঘন্টা বক্তৃতা করেন। গত ৩০ জানুয়ারি এই অধিবেশন শুরু হয়। ২২ কার্যদিবসের এই অধিবেশনে দুটি বিল পাস হয়েছে। অধিবেশনে ৫০টি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়।
সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অগ্নি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। কয়েকদিন আগে আমরা রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দেখলাম। এটি একটি দুর্ঘটনা। কিন্তু আমরা দেখি, রাজনীতির নামে অগ্নি সন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। বিএনপি নির্বাচন বাধা দেওয়ার নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। এরা কি এসব করতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে দেশ-বিদেশে লেখা হচ্ছে, তাদের নেতাকর্মীদের রাজবন্দি করা হচ্ছে। কিসের রাজবন্দি? তারা তো সন্ত্রাসী। হয় মানুষ হত্যার হুকুম দাতা, না হয় সন্ত্রাসী, না হয় অর্থদাতা। ২৮ নভেম্বর বিএনপির নেতাকর্মীদের হাত তাদের আক্রমণ থেকে সাংবাদিক, জাজেস কোয়ার্টার, প্রধান বিচারপতির বাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ কোন কিছুই রেহাই যায়নি। পুলিশকে হত্যা ও নারীদের উপর হামলা করা হয়। তাহলে তারা কিসের রাজবন্দি? তারা তো সন্ত্রাসী। লন্ডন থেকে হুকুম আসে, এখন থেকে নেতারা সেই হুকুম তামিল করে। আমার প্রশ্ন বিএনপি নেতারা কি বোকা? লন্ডন থেকে হুকুম আসে। তারা আগুন সন্ত্রাস করে ছবি তুলে পাঠায়। তারা কি জানে না, ছবি পাঠালে রেকর্ড থেকে যায়? এখানে যেসব সংসদ সদস্য রয়েছে, তাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা নিজ নিজ এলাকায় খোজ রাখবেন, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে, তাদের যেন বিচার হয়। শাস্তিটা যেন নিশ্চিত হয়। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপিকে আজরাইল মন্তব্য করে সংসদ নেতা বলেন, গাজায় ইজরাইল যা করছে, গণহত্যা চালাচ্ছে, শিশুদের হত্যা করছে। আর আমাদের দেশের জন্য বিএনপি আজরাইল হয়ে এসেছে। তারা নির্বাচন বন্ধ করতে চায়। গণতান্ত্রিক ধারা চায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যে দেশের উন্নয়ন হয় সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
সংসদের ভোট নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদেরের বক্তৃতার জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা সংসদে ভোটে চিত্র তুলে ধরলেন। তিনি দ্বিতীয়-তৃতীয় ও চতুর্থ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা দেখাননি। জিয়াউর রহমান ভোট চুরির পথ দেখিয়ে গেল। বিরোধী দলীয় নেতার ভাই (এরশাদ) সেই পথেই হাঁটলেন। জিয়াউর রহমানের হ্যা-না ভোট আগে থেকেই দেওয়া হয়েছিল। আমি খুশি হতাম বিরোধী দলীয় নেতা যদি তার ভাইয়ের ৮৮ সালের নির্বাচনের ফলফল দেখাতেন তাহলে ভাল হতো। এরপর এরশাদের পথ ধরে খালেদা জিয়াও একই পথ ধরলেন। সে নির্বাচনে ২১ শতাংশ ভোট দেখালেন বিরোধী দলীয় নেতা। কিন্তু সে ভোট হয়নি। জনগণ মেনে নিতে পারেননি। এরপর ২০০৬ সালের নির্বাচন। সে নির্বাচনও হয়নি। এরপর ১/১১ আসলো। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনগণ ভোট দিলো। এরপর বিএনপি শুধুই ভোট ঠেকাতে চাইলো।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলান্সে নীতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। সেটা অব্যাহত থাকবে। আমরা ইশতেহারেও ঘোষণা করেছি। ইশতেহার বাস্তবায়ন করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই রমজানে যেন পণ্যের দাম সহনীয় থাকে, আমরা সে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়, মজুদ করা হয়, সেগুলো যেন না হয় সেজন্য সমন্বয় করা হবে।