ট্রিবিউন ডেস্ক: অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন করিডোর পায়রা সমুদ্রবন্দর। দিন দিন প্রাণ পাচ্ছে বন্দরটি। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও এখন পায়রার চাহিদা। বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে বেশ কয়েকটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র বিমুখ হলেও এরই মধ্যে আধুনিক কনটেইনার টার্মিনাল তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ডেনমার্ক। অন্যদিকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চায় সৌদি আরব।
এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বন্দর পরিদর্শন করেন বাংলাদেশে ডেনমার্ক দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠক করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
ইউরোপ, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিজস্ব প্রযুক্তিতে আধুনিক মানের কনটেইনার টার্মিনাল ফ্যাসিলিটিজ তৈরি করে ডেনমার্কের মারকস লাইন শিপিং। পায়রা বন্দরেও একটি বৃহৎ ও উন্নতমানের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে তারা। এটি নির্মিত হলে পায়রা বন্দর সারা পৃথিবীর কনটেইনার শিপিং নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে, যা বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অভূতপূর্ব সাফল্য বয়ে আনবে।
পায়রা বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিডিয়া কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ডেনমার্কের প্রতিনিধিদলটি বন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রশংসা করেছে এবং ভবিষ্যতে পায়রা বন্দরের উন্নয়নে তারা পাশে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করে।
এদিকে পায়রায় বিশেষ শিল্পাঞ্চল করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। সম্প্রতি দেশটিতে সফর শেষে ফিরে এসে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি জানান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ওনাদের (সৌদি আরব) একটা বিশেষ অর্থনৈতিক জোন দিতে চান।’
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দরের চ্যানেল বর্তমানে দেশের সবচেয়ে গভীরতম চ্যানেল। ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার কারণে জেটিতে সরাসরি মাদার ভেসেল ভিড়তে পারছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে চান বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ১০ দশমিক ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ বন্দরে এনেছি। এপ্রিলের পর থেকে মেইনটেনেন্স ড্রেজিংয়ের কাজও শুরু হওয়ার আশা করছি। সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের জাহাজগুলো প্রতিনিয়ত আসছে। শুধু কয়লা না, পাথরসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সরঞ্জামাদি আমরা এ বন্দরে আনছি করছি।’
পায়রা বন্দর (ট্রাফিক বিভাগ) পরিচালক মো. আতিকুর রহমান বলেন, বড় বড় জাহাজ আসতে পারাটা কিন্তু বাংলাদেশে বন্দর অপারেশনে একটা নতুন সংযোজন। এই নতুন সংযোজন কাজে লাগিয়ে আমাদের যারা আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তারা বিশ্বে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারিত করতে পারবেন।’
বন্দরে একের পর এক সম্ভাবনায় খুশি ব্যবসায়ী নেতারা। এখানে শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠলে দেশের ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন।
পটুয়াখালী ব্যবসায়ী নেতা সুলতান আহমেদ মৃধা বলেন, জাহাজ শিল্প এবং বিভিন্ন শিপইয়ার্ড, শিল্পকারখানা হবে–এ জন্য ব্যবসায়ীরা অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আছেন।
উল্লেখ্য, গত সাড়ে সাত বছরে পায়রা বন্দরে ভিড়েছে ২ হাজার ৩৪৪টি জাহাজ। এর মধ্যে বিদেশি জাহাজ ৩৯৪টি, যা থেকে সরকারের আয় হয়েছে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মু. আতিকুর রহমান সুমন
Copyright © 2025 চাঁপাই ট্রিবিউন. All rights reserved.