রাজশাহীতে ভূমি অফিস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ, ছবি ভাইরাল

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২২

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর চাঘাটের একটি ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহসিলদারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ঘুষের বিনিময়ে খাজনা নেওয়া বা সেবা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ সংক্রান্ত একাধিক ভিডিও ও ছবি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক গণমাধ্যম প্রকাশ পায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই তহসিলাদার ভূমি অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন। সরকারি কোষাগারে জমির খাজনা দিতেও তাকে ঘুষ দিতে হচ্ছে। যার খাজনার পরিমাণ যত বেশি ঘুষের অংকটাও ততো।

অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম মো. আব্দুস সাত্তার। তিনি চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর কোর্ট স্টেশন এলাকায়। এক মাস হল তিনি সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তহসিলদার হিসেবে বদলি হয়ে এসেছেন।ভিডিওতে ঘুষ নেওয়া ব্যক্তিই যে আব্দুস সাত্তার তা উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারীরা নিশ্চিত করেছেন।

প্রকাশ পাওয়া তিনটি ভিডিওর একটিতে দেখা যায়, তার টেবিলের সামনে টাকা হাতে নিয়ে বসে থাকা সেবাগ্রহীকে তিনি বলছেন, ‘৯০০ টাকা দিলে হবে! না না হবে না, এভাবে। আশ্চর্য তো। গরিব মানুষও দিছে। আর আপনি তো মার্চেন্ট মানুষ। ৯০০ টাকা গুণে দিছেন, এটা কেমন কথা হলো!’

এ সময় কমিশনার অফিসের তদবিরে আসা আরেকটি কাজ প্রসঙ্গে তিনি আরেকজনকে বলছেন, ‘কমিশনার অফিস থেকে ফোন কেন? এই অফিসে লোক নাই। তাহলেতো ৭ দিন আটকাতে হয়।

দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, তার টেবিলের সামনে বসে থাকা অপর সেবাগ্রহীতাকে ৪ হাজার টাকার সঙ্গে আরও অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিতে বলছেন তিনি। তা না হলে তিনি খাজনার চেক না কাটার হুমকি দেন।

তৃতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, তহসিলদার আব্দুস সাত্তার একজন সেবাগ্রহীতাকে অফিসের বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি গাছ তলায় দাঁড়িয়ে কথা বলার ফাঁকে আড়াল করে কয়েক দফায় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রেখেছেন।

ওই ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দুই জন পিওন এবং একজন তহসিলদার। তাদের সবাই মানুষকে হয়রানি করেন। আর নিজ সিটে বসে তহসিলদার প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন করেন। অফিসের পিওন কুদরত এসবের মধ্যস্থতা করে থাকে।

মাত্র কয়েক দিন আগে যোগদান করেই অফিসকে ঘুষের আতুরঘরে পরিণত করেছেন আব্দুস সাত্তার। তিনি টাকা ছাড়া কোনো কাজই করছেন না। তার চাহিদার কানাকড়ি কম হলেও তিনি সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। ১০ টাকার খাজনাও তিনি ১০০ টাকা আদায় করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে তহসিলদার আব্দুস সাত্তার বলেন, আমি সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এক মাস হল যোগদান করেছি। আমি এখানে কাউকেই সেভাবে চিনি না। আমি কারও কাছ থেকে ঘুষ নেইনি।

এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেব জানান, ভিডিওগুলো ইতিমধ্যে পেয়েছি এবং দেখেছি। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন