জিয়ার বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজন ও ভোট জালিয়াতি

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩

ট্রিবিউন ডেস্ক: হ্যাঁ-না ভোটের জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে বছর না পেরুতেই ১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল এক ঘোষণার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘোষণা দেয় জিয়াউর রহমান। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি পদে থেকে জিয়া নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে পুনরায় রাষ্ট্রপতি পদে বসে। এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়ার পক্ষে পোস্টারেও তার পদবী হিসেবে মেজর জেনারেল লেখা হয়েছিলো। অবসরপ্রাপ্তরা পদবী ব্যবহার করলে তার উল্লেখ থাকা লাগে জিয়ার সময় সেটি মানা হয়নি। নির্বাচনটি চরম বিতর্কিত কারণ এটি বাংলাদেশের একমাত্র নির্বাচন যেখানে জিয়াউর রহমান বেশিরভাগ কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের ৯৫-৯৯% পর্যন্ত ভোট পেয়েছিলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করার সূচনা এখান থেকেই।

জিয়া বিরোধী দলগুলোকে মাত্র ৪০ দিনের নোটিসে নির্বাচনে আহ্বান করেন এবং মাত্র ২৩ দিন তাদের প্রচারণার সুযোগ দেন। অন্যদিকে তিনি নিজের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সরকারি প্রশাসনযন্ত্রকে পুরোপুরি কাজে লাগান। সরকারি মালিকানাধীন টিভি, রেডিও এবং সংবাদপত্রকে একচ্ছত্রভাবে কাজে লাগানো হয়। সর্বোপরি এই নির্বাচনে প্রার্থী জিয়াউর রহমান একাধারে প্রেসিডেন্ট, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক, সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। আর কিছু ঘটুক বা নাই ঘটুক, এসব ক্ষমতার বলে এটা নিশ্চিত হয়েছিল যে, পুলিশ এবং সরকারি কর্মচারীরা তার পক্ষে কাজ করবে।

স্বয়ং জিয়া কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অধ্যাদেশ-১৯৭৮ অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারবেন না যিনি সরকারি চাকরি করেন এবং এতে বেতন গ্রহণ করতে থাকেন। জিয়া এই অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ১৯৭৮-এর নির্বাচনে দাঁড়িয়ে আবারও অবৈধ প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।

গবেষক মহিউদ্দন আহমদ তার ‘বিএনপি সময়-অসময়’ বইতে লিখেছেন, বিএনপি এমন একটি দল, যার জন্ম স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়নি। এই অঞ্চলে সব রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়েছে ক্ষমতার বৃত্তের বাইরে, রাজপথে কিংবা আলোচনার টেবিলে। বিএনপি সেদিক থেকে ব্যতিক্রম, সেই দিক থেকে একে কোন রাজনৈতিক দলও বলা চলে না। দলটি তৈরি হলো ক্ষমতার শীর্ষে থাকা একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তির দ্বারা, যিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপতি পদকে ব্যবহার করে তিনি রাজনীতি করবেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন