অন্য রকম মানবিক দৃষ্টান্ত দেখালেন রেলওয়ে ও রাবি কর্তৃপক্ষ

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০২৪

আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী):- আজ অন্য রকম এক নজির ও মানবিক দৃষ্টান্ত দেখালো বাংলাদেশ রেলওয়ে কতৃপক্ষ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর এটা না হলে চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো হাজারের অধিক শিক্ষার্থী।

এজন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের মহব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি গোলাম সাব্বির সাত্তার সর্বোচ্চ ধন্যবাদ পেতে পারেন।

ঘটনা:-
ধূমকেতু এক্সপ্রেস নিদৃস্ট সময়ের প্রায় ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট বিলম্বে রাজশাহী পৌছে। ট্রেন টিতে কাকতালীয় ভাবে ভ্রমন করছিলেন পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার।ট্রেন টির অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্বের জন্য তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পক্ষ থেকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ২:৩০ এর পরিবর্তে ৪:০০ টায় নেওয়ার অনুরোধ জানালে রাবি কতৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় তার মেনে নেন।
কারন ট্রেন টিতে রাবিতে ভর্তি-ইচ্ছুক হাজারের অধিক শিক্ষার্থী আসছিলেন।

উল্লেখ্য :-পথিমধ্যে ঢাকা থেকে রাজশাহী গামি ধূমকেতু এক্সপ্রেসের লোকোমোটিভ/ইঞ্জিন বিকল হওয়ায়, চিলাহাটি এক্সপ্রেসের লোকো/ইঞ্জিন ধূমকেতু তে লাগিয়ে রওয়ানা করেছিলো রাজশাহীর উদ্দেশ্যে কারণ পুরো ট্রেন ভর্তি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী | আর চিলাহাটি এক্সপ্রেস ইঞ্জিন বিহীন অবস্থায় শরৎনগর রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করছিলো ঈশ্বরদী থেকে আসা নতুন ইঞ্জিনের জন্য।

পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ০৫/০৩/২০২৪ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এটাকে পরীক্ষা না বলে ভর্তি যুদ্ধ বলা যেতে পারে। প্রায় ১০০০ ছাত্র ছাত্রী আজকে ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে এসে বিকেল সাড়ে তিনটার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন । রেল ব্রোকেনের জন্য ধুমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকেই বিলম্বে রওনা হয়। সকাল ১১ টায় হিসেব করে দেখা গেল ট্রেনটি বিকেল ৩:০০ টা নাগাদ রাজশাহী পৌঁছবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রনটি অন্য ট্রেনকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে আনছিলাম। ভাগ্য এতই খারাপ, লাহেড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন ফেইল করে, চাকা ঘুরছে না । কি করা যায়, কি করা যায় পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন কেটে এনে ধুমকেতু আবার চালু করলাম। হিসেবে করে দেখলাম ট্রেনটি বিকেল ৪ ঘটিকায় রাজশাহী পৌঁছবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।

মাননীয় ভিসি মহোদয়কে পরীক্ষার সময় পিছিনোর বিনীত অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে প্রায় ৪ বার ফোন করে ট্রেনের খবর নিলেন। ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছে। দূশ্চিন্তা ছাড়ছে না। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপায়ন্ত না দেখে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাশ করলাম। ঈশ্বরকে খুব একটা ডাকি না, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে জোড়ে জোড়ে ডাকা শুরু করলাম, একটু মানত ও করলাম। ঈশ্বর মনে হয় সদয় হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে দিলাম, তখন বিকেল ৩/৩৮ ঘটিকা। দৌড় দৌড় হলে ঢুকতে হবে ৪ টার মধ্যে। ভিসি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করলাম ছেলে মেয়েদের হলে ঢোকার সুযোগ দেয়ার জন্য। তিনি কথা রাখলেন এবং রেলওয়ের সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন। ট্রেন পরিচালনায় পাকশী কন্ট্রোলে সার্বক্ষনিক ভাবে মনিটরিং করেন ডিআরএম(পাকশী)। নিজেকে বেশ হালকা লাগছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন