আর কোনো ব্যাংকের একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ২:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

ট্রিবিউন ডেস্ক: প্রাথমিকভাবে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে বিভিন্ন সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও ইতিমধ্যে একীভূত হতে সম্মত পাঁচ ব্যাংক বাদে অন্য কোনো ব্যাংককে এ প্রক্রিয়ায় আপাতত আর শামিল করা হচ্ছে না বলে জানা গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে। অর্থাৎ প্রক্রিয়াধীন পদ্মা, ন্যাশনাল, বেসিক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের বাইরে অন্য কোনো ব্যাংক একীভূত হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছে এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সোমবার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালক ও চেয়ারম্যানরা। বৈঠকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে বিভিন্ন সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ব্যাংক সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গত মাসে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডুবতে থাকা আরেক বেসরকারি ব্যাংক পদ্মা। এরপর একে একে কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি বেসিক ব্যাংক, এবং ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়ার খবর আসে।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্বেচ্ছায় একীভূত হতে চাওয়া দশ ব্যাংকের বাইরে– নতুন করে আর কোনো ব্যাংক একীভূত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই দশ ব্যাংক একীভূত করার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে একীভূত করার প্রয়োজন দেখা দিলে তখন ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।

তিনি বলেন, ব্যাংক মার্জারের আমরা সরকারি-বেসরকারি পাঁচটি প্রপোজাল পেয়েছি। আপাতত এই প্রস্তাবগুলোর বাইরে আর নতুন কোনো প্রস্তাব আমরা নেবো না। এই পাঁচটি প্রস্তাবের আওতাধীন (১০টি) ব্যাংক একীভূত করার পরে প্রয়োজন হলে নতুন মার্জারে যাওয়া হবে। এগুলোর প্রক্রিয়া শেষ নাহওয়া পর্যন্ত নতুন করে কোনো ব্যাংক মার্জার করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।”

মেজবাউল হক বলেন, ব্যাংক একীভূত করতে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। অডিটর নিয়োগ, সম্পদ ও দায় ঠিক করা, শেয়ার দর ঠিক করা, শেয়ার অংশ নির্ধারণও আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। এই পাঁচ প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংক) অভিজ্ঞতা নেবো। অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন আছে।

সাধারণত, দুটি ব্যাংক একীভূত করার সব ধরনের প্রস্তুতি ও আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে তিন-থেকে চার বছর লেগে যেতে পারে।

পাঁচটি প্রস্তাবের মধ্যে কোন কোন ব্যাংক রয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে মেজবাউল হক বলেন, ব্যাংকগুলোর মধ্যে পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংক রয়েছে। বাকিগুলোর নাম তো গণমাধ্যমে চলে এসেছে।

এর আগে ব্যাংক একীভূতকরণ সংক্রান্ত নীতমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালার আলোকে খারাপ অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলো নিজ থেকে একীভূত না হলে বাধ্যতামূলকভাবে একীভূত করা হবে। এর জন্য দুই ব্যাংকের মধ্যে আগে সমঝোতা সই করতে হবে। এরপর আমানতকারী, পাওনাদার ও বিনিয়োগকারীর অর্থ ফেরতের পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের সার্বিক আর্থিক চিত্র বের করবে। সবশেষ আদালতের কাছে একীভূতকরণের আবেদন করতে হবে।

এতে কোনো ব্যাংক মূলধন ও তারল্য ঘাটতি, খেলাপি ঋণ, সুশাসনের ঘাটতি এবং আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপের কারণে পিসিএ ফ্রেমওয়ার্কের আওতাভুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পুনরুদ্ধারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধ মানতে হবে। পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে আমানতকারীর স্বার্থে ব্যাংক বাধ্যতামূলক একীভূতকরণ হবে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খল এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যে এ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পোস্টটি শেয়ার করুন