আজ ঐতিহাসিক ১৭ মে ; ঘোর অমানিশায় ডুবে থাকা জাতির মাঝে আলোর সারথীর ফিরে আসা

Chapai Chapai

Tribune

প্রকাশিত: ১:১৬ পূর্বাহ্ণ, মে ১৭, ২০২৩

মু: আতিকুর রহমান সুমন: আজ ঐতিহাসিক ১৭ মে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ছোট বোন শেখ রেহানা ছাড়া বাবা -মা, ভাইসহ কাছের সব আত্মীয় স্বজন হারিয়ে হতবিহ্বল, অসহায় ও অভিভাবকহীন হয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থান করতে হয়েছে। এদেশ তখন মোস্তাক -জিয়া গংদের মতো হায়েনাদের দখলে। বাংলাদেশে তো ফিরে আসতে দেওয়া হয়নি বরং বিদেশের মাটিতে চলেছে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

সকল রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সব হারিয়ে বাংলার আপামর জনতার আলোর পথে যাত্রী হয়ে, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজের সমাপ্ত করতে ফিরে এলেন এদেশে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসন শেষে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টিও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সেদিন সারা বাংলাদেশের মানুষের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার অমর স্লোগান, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় বাংলার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব’; ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’।

বাংলার মানুষ ফিরে পেয়েছিল এক স্বপ্ন সারথীকে। আত্মার মানুষকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সেই স্বপ্নের যাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে বারবার আঘাত এসেছে, থামাতে পারেনি অদম্য শেখ হাসিনাকে।

সকল বাধা বিপত্তি, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র উপেক্ষা আজ তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার কাজে সফল হয়েছেন। বিশ্ব নেতৃত্ব আজ অকপটে স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে।

বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ এখন কারো আশ্রিত তাবেদার রাষ্ট্র নয়। ভৌগোলিক রাজনীতিতে যে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান বাংলাদেশের তা যথাযথ ব্যবহার করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বাংলাদেশ অর্থনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, রাশিয়া বা অন্যান্য যেকোনো পরাশক্তির দেশের কাছে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে থাকে। নিম্ন আয়ের দেশগুলো শুধু নয় অনেক উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ অনুকরণীয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি আছেন বলেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ একটি গর্বের নাম এখন। তিনি আছেন বলেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে।
তাই ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাঙালি জাতির ইতিহাসে আস্থা ভরসার আলোর সারথীকে পাওয়ার দিন। নতুন স্বপ্নে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশের ইতিহাসে শুয়ে নয় বিশ্ব নেতৃত্বের ইতিহাসেও স্বর্ণাক্ষরে লেখা হবে হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
________________
লেখক:
প্রকাশক ও সম্পাদক
চাঁপাই ট্রিবিউন।

পোস্টটি শেয়ার করুন